চব্বিশের ছাত্র আন্দোলন দমন নিয়ে শেখ হাসিনার ‘গুলির নির্দেশ’ সংক্রান্ত বিবিসির প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করেছেন তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
বুধবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জয় লিখেছেন, ওই প্রতিবেদনটি ‘অনৈতিক সাংবাদিকতার একটি নির্লজ্জ উদাহরণ’। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিত্তিতে প্রকাশিত তথাকথিত ‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ বিকৃত তথ্য দিয়ে তৈরি এবং ন্যূনতম সাংবাদিকতার নীতিমালা মানা হয়নি।
তিনি লিখেছেন, প্রতিবেদনটিতে অভিযুক্তদের বক্তব্য নেওয়া হয়নি, প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপটও উপস্থাপন করা হয়নি। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের অডিও ও কিছু ভিডিও ফুটেজের ওপর ভিত্তি করে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে ফাঁস হওয়া একটি অডিওতে শেখ হাসিনাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিতে শোনা যায়। ফরেনসিক পরীক্ষা করে অডিওটির সত্যতা যাচাই করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
জয় লিখেছেন, যাত্রাবাড়ীর ঘটনায় পুলিশ চরম পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছিল। হাজার হাজার সহিংস বিক্ষোভকারী থানায় হামলা চালিয়েছিল। সেদিন সেনারা হঠাৎ সরে যাওয়ায় পুলিশ একা পড়ে যায়। অথচ এই প্রেক্ষাপট বিবিসির প্রতিবেদনে নেই।
তিনি বলেন, ওইদিন বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। বিভিন্ন ভিডিওতে সেই ভয়াবহ দৃশ্য থাকলেও বিবিসি সেগুলো দেখায়নি।
জয় আরও লিখেছেন, অডিওটি যে জাল নয়, তা বলা হলেও কবে, কীভাবে রেকর্ড করা হলো, কে ফাঁস করল– এসব স্পষ্ট করা হয়নি। তিনি বলেন, সেনারা সরে গেল কেন, পুলিশ কেন অবরুদ্ধ হলো– এসবও জানা যায়নি।
তিনি লিখেছেন, সেদিন রাজধানীজুড়ে সহিংসতা চলছিল, বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগানো, পুলিশের ওপর হামলা, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্সে হামলা হয়েছিল। চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১৫ জনকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। অথচ এসব তথ্য এড়িয়ে গেছে বিবিসি।
জয় লিখেছেন, প্রতিবেদনটি মূলত সরকারঘনিষ্ঠ সূত্রের তথ্য নিয়ে তৈরি এবং আন্দোলনকারীদের দায় আড়াল করেছে। তিনি বলেন, প্রেক্ষাপট উপস্থাপন না করে অডিও ক্লিপের ওপর ভিত্তি করে এমন সিদ্ধান্ত টানা সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতি মানা হয়নি।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি এমন ঘটনা লন্ডনে হতো, তখন কি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার পুলিশকে আত্মরক্ষার নির্দেশ দিতেন না? বিবিসির অনুসন্ধান দলও কি তখন এমন একপেশে প্রতিবেদন প্রকাশ করত?