জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে ঘিরে সারাদিন দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হওয়ার পর কারফিউ জারি করা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে শহরে কোনো হামলা বা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা না ঘটলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাত ৮টা থেকে কারফিউ শুরু হয়। স্পর্শকাতর স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান ও র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল দেখা গেছে।
রাত সাড়ে ৮টায় শহর মোটামুটি শান্ত দেখা যায়। দোকানপাট বন্ধ, রাস্তায় মানুষ নেই বললেই চলে। যারা বাইরে ছিলেন, তারাও বাড়িমুখো এবং আতঙ্কিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন রাত সাড়ে ৮টায় বলেন, “এখন শহর শান্ত আছে। হামলাকারীরা কোথাও কোথাও আছে, তবে পুলিশের সঙ্গে তারা মুখোমুখি নয়।” সারাদিনের হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশের ৩০ থেকে ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি থাকবে।
বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন।
এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে মঙ্গলবার থেকেই উত্তেজনা ছিল। সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চলছিল। বুধবার সকালে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতেও হামলা হয়।
বেলা দেড়টার দিকে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে নেতারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেহাট হয়ে মাদারীপুর যাওয়ার পথে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের হামলা হয়।
এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ পরিস্থিতিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এবং পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে সেখান থেকে বের হন।
দুপুরে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যায় কারফিউ জারি করা হয়।