গোপালগঞ্জে সহিংসতা: এনসিপির কর্মসূচি নিয়ে আগাম তথ্য ‘অপর্যাপ্ত’ ছিল বলে স্বীকার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জে এত বড় ঘটনা ঘটবে, এ ধরনের আগাম কোনো তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে না থাকার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে বুধবার গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করে দলটি।

এনসিপি নেতারা গোপালগঞ্জ শহরে আসার আগে সকালে সড়ক অবরোধ ঘিরে পুলিশের গাড়িতে আগুন ও পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলা হয়। দুপুরে শহরের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুর হয়।

এরপর দলের নেতারা মঞ্চে আসেন এবং কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে মাদারীপুরের দিকে রওয়ানা দিলে আবার হামলার শিকার হয় তাদের গাড়িবহর। এরপর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ ও গুলির ঘটনায় গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। নিহত হন চারজন। রাতে কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

এনসিপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের লোকজন জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা করেছে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে মঙ্গলবার রাত থেকে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায়। এ অবস্থায় বুধবারের পরিস্থিতি নিয়ে আগাম কোনো তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে ছিল কিনা, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “গোয়েন্দাদের তথ্য ছিল, তবে এতো পরিমাণ যে হবে ওই তথ্য ছিল না।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে না পারার অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটাতো আপনিও দিতে পারেন, যার যার বক্তব্য সে সে দিবে।”

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেখানে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। এ ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি এখন শান্ত বলেও জানান তিনি।

গোপালগঞ্জের ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করা না হলে এনসিপি ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “যারা অন্যায় করেছে, তারা গ্রেপ্তার হবে।”

তিনি আরও জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং এ পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।