রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর জঙ্গি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দেওয়া দুই শিক্ষক মাহেরিন চৌধুরী ও মাসুকা বেগমকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানায়, বৈঠকের শুরুতে মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়।
বৈঠকে বলা হয়, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার এবং আহতদের চিকিৎসা সহায়তায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
দপ্তর আরও জানায়, নিহত দুই শিক্ষিকাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং এ সম্মাননার ধরন ও প্রক্রিয়া দ্রুত নির্ধারণ করা হবে।
এছাড়া, শুক্রবার সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করবে।
গত সোমবার বিমান বাহিনীর একটি ‘এফ-৭ বিজিআই’ জঙ্গি বিমান উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিমানটি মাঠে পড়ে ছেঁচড়ে গিয়ে ধাক্কা খায় একটি দোতলা অ্যাকাডেমিক ভবনে এবং আগুন ধরে যায়।
তখন ছিল ছুটির সময়। ভবনের প্রবেশপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভেতরে থাকা অনেকে আটকে পড়েন। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে আছেন শিক্ষক মাহেরিন চৌধুরী ও মাসুকা বেগম।
তাদের সাহসিকতার গল্প দুর্ঘটনার দিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বলা হয়, তারা চাইলে আগে বের হয়ে আসতে পারতেন, কিন্তু তার বদলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেক শিশুকে বাঁচালেও নিজেরা আর ফেরেননি।
দুর্ঘটনায় আহত ৫৭ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, দুর্ঘটনার তিন দিন পরও তিন শিক্ষার্থী ও দুই অভিভাবকের সন্ধান মেলেনি।