সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশে মোট ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষক বিদ্যমান ১১তম গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত) এবং ১২তম গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন) থেকে উন্নীত হয়ে এখন থেকে ১০ম গ্রেডে বেতন পাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ সিদ্ধান্ত প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করেছে। এতে তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং সামাজিক মর্যাদা সুসংহত হবে। এর ফলে তারা আরও সৃজনশীল ও উদ্দীপ্ত হয়ে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবেন। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য আরও উন্নত ও গতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পদক্ষেপ সরকারের প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতি দায়বদ্ধতা ও সম্মান প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। এটি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সরকার আশা করে, প্রধান শিক্ষকরা অন্যান্য শিক্ষকমণ্ডলী, অভিভাবক এবং সকল স্তরের অংশীজনের সহযোগিতায় প্রাথমিক শিক্ষার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করবেন।
এর আগে গত ১৩ মার্চ আপিল বিভাগ এক রায়ে জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা ও বেতন পাবেন। ওই রায়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা একটি রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন সরকার প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেয় এবং একই দিন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে পরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম ও অপ্রশিক্ষিতদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন করে আসছিল।
২০২৩ সালের ৪ মার্চ বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন শিক্ষক হাই কোর্টে রিট করেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট এক রায়ে প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত উভয় প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে এবং পদমর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে তা কার্যকর করতে বলে।
পরে সরকারের করা আপিল খারিজ করে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ রায় দেয়।
এই রায় কার্যকর না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকরা আদালত অবমাননার মামলা করেন। ২০২২ সালের ২৭ জুন হাই কোর্ট এক মাস সময় দিয়ে বিবাদীদের কারণ দর্শাতে বলে।
পরবর্তীতে চূড়ান্ত শুনানি শেষে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ১৩ মার্চ সিভিল রিভিউ পিটিশন নিষ্পত্তি করে রায় দেন।