দেশে গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেন সঠিকভাবে না হয়, সেজন্য আবারও অস্থিরতা তৈরির ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি মনে করেন, এ ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বরে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা’ শীর্ষক এ আয়োজন ছিল জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “যত দিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, যুবদল ও ছাত্রদল টিকে থাকবে, তত দিন এই দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করার কোনো শক্তি কেউ হতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “যখনই দেশে অর্থনীতি ধ্বংস হয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়, তখনই বিএনপির ওপর পুনর্গঠনের দায়িত্ব এসে পড়ে। আগেও তা হয়েছে, এবারও সে দায়িত্ব বিএনপিকেই নিতে হতে পারে।”
তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “তারেক রহমান যেভাবে রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, তাতে আমার মনে পড়ে মার্টিন লুথার কিংয়ের বিখ্যাত উক্তি ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’। তারেক রহমান হ্যাজ আ ড্রিম। ইনশা আল্লাহ, সেই স্বপ্ন নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব, জয় করব—উই শ্যাল ওভারকাম।”
রাজনৈতিক দলগুলোকে কাদা ছোড়াছুড়ি না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ও অর্থনীতিকে পুনর্গঠনের যে সুযোগ এসেছে, তা সবাই মিলে কাজে লাগাতে হবে। একসাথে কাজ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ, যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, আবদুস সালাম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। যুবদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
বেলা সাড়ে তিনটায় অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য দেন যুবদল সভাপতি। এরপর প্রদর্শিত হয় একটি তথ্যচিত্র, যেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত যুবদল কর্মীদের তথ্য তুলে ধরা হয়। পরে পরিবেশিত হয় একটি থিম সং এবং ঢাকায় আঁকা গ্রাফিতিগুলোর ভিজ্যুয়াল প্রদর্শন।
অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ যুবদলের ৭৮ জন নেতা–কর্মী ও সমর্থকের পরিবারের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও আর্থিক অনুদান তুলে দেওয়া হয়। অনুদান প্রদান করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়।