হাই কোর্ট: বিবাহিত নারীর সঙ্গে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে যৌন সম্পর্ক ‘ধর্ষণ’ নয়

ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে জানিয়েছে, যদি কোনও বিবাহিত নারী স্বামী ছাড়া অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ান, তবে তিনি সেই পুরুষের বিরুদ্ধে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারবেন না।

এক বিবাহিত নারীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস দেওয়ার সময় আদালত এ রায় ঘোষণা করে। মামলায় অভিযোগকারী নারী দাবি করেছিলেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিযুক্ত তার সঙ্গে দীর্ঘদিন শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন।

বিচারপতি শালিনী সিং নাগপাল রায়ে বলেন, “একজন প্রাপ্তবয়স্ক বিবাহিত নারী যদি বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে সম্মতি দেন, তবে তা অনৈতিক ও উচ্ছৃঙ্খল হলেও সেটি ভুল ধারণার কারণে প্ররোচিত হওয়া নয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৯০ ধারা এক্ষেত্রে নারীর কার্যকলাপকে বৈধতা দিতে পারে না।”

আদালত আরও মন্তব্য করে, অবিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে বিয়ের প্রলোভন দেখানো একধরনের প্রতারণা হতে পারে, কিন্তু বিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে তা যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ, অভিযোগকারী নারী স্বামী-সন্তানসহ শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করছিলেন এবং আইনি বিচ্ছেদের কোনো প্রক্রিয়াও শুরু করেননি।

রায়ে উল্লেখ করা হয়, অভিযোগকারী নারী দুই সন্তানের মা এবং অভিযুক্তের চেয়ে বয়সে দশ বছরের বড়। তিনি দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিযুক্তের সঙ্গে ৫০ বারের বেশি সম্মতিমূলক সম্পর্কে ছিলেন। ফলে, এটি সম্মতিনির্ভর সম্পর্ক ছাড়া কিছু নয়।

হাই কোর্টের মতে, এ ধরনের সম্পর্ক পরে তিক্ততায় রূপ নিলেও তাকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা যায় না এবং প্রতিশোধমূলকভাবে ফৌজদারি মামলা করা আইনের অপব্যবহার।

আদালত স্পষ্ট ভাষায় জানায়, বিবাহিত অবস্থায় পরপুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ‘ব্যভিচার’ হিসেবে গণ্য হতে পারে, কিন্তু তা কোনোভাবেই ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ধর্ষণ’ নয়।