ইস্তানবুলে আলোচনা ব্যর্থ হলে ‘বড় পরিসরে যুদ্ধ’ হতে পারে : পাকিস্তান প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ইস্তানবুল — পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে তুরস্কের ইস্তানবুলে শনিবার শুরু হওয়া শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে “বড় পরিসরে যুদ্ধ” শুরু হয়ে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ। আলোচনা চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে—এটি রোববার পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

আলোচনায় অংশ নেওয়া দুই দেশের কর্মকর্তারা বন্ধুপ্রতিম পন্থায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঠিক করতে চেষ্টা করছেন। ইস্তানবুল থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান পর্যায়ের আলোচনাকে ‘প্রায়োগিক স্তরের আলোচনা’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে একটি স্থায়ী সমাধান আসার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

শিয়ালকোটে দেওয়া এক ভাষণে আসিফ বলেন, “আমি বিশ্বাস করি তারা শান্তি চায়; কিন্তু যদি আমরা চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হই, তাহলে আমাদের কাছে বিকল্প আছে — কোনো চুক্তি না হলে, তাদের সঙ্গে আমাদের বিস্তৃত যুদ্ধ হবে।” তিনি আরও বলেন, “কিন্তু আমি দেখছি যে তারা শান্তি চায়।”

এই পরিস্থিতির পূর্বভাগে, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দোহায় একবার যুদ্ধবিরতি সূচিত হয়েছিল; ওই সীমান্তে সংঘটিত পাল্টাপাল্টি সংঘাতের ফলে বহু মানুষ নিহত এবং কয়েকশ আহত হয়েছেন। গত রোববার দুই পক্ষের মধ্যে ঘোষণা করা সেই যুদ্ধবিরতি এখনও বলবৎ আছে।

আলোচনায় আফগানিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাজি নাজিব। পাকিস্তান পক্ষ তাদের প্রতিনিধি দলের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। ইস্তানবুলে অবস্থানরত এক প্রতিবেদক জানাচ্ছেন, দুই পক্ষের মধ্যে চলমান বিষয়গুলোকে বাস্তবমুখী পর্যায়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

দুই দেশের মধ্যে যে সীমান্ত বিরোধ বিদ্যমান, সেটি হলো প্রায় ২ হাজার ৬শ’ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ বিতর্কিত সীমান্ত — ডুরান্ড লাইন — যা আফগানিস্তান স্বীকৃতি দেয় না। এ সীমান্তের কারণে দু’দেশের মধ্যে প্রায়ই ছোটখাটো সীমান্ত সংঘাত বেঁধে যায়।

পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, تেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের জঙ্গি গোষ্ঠী আফগানিস্তানের মাটি থেকে পাকিস্তানে প্রাণঘাতী হামলা পরিচালনা করছে। আফগানিস্তান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এই অবস্থা থেকেই সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলা থেকে তীব্র সংঘাত শুরু হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ইস্তানবুলে চলমান এই আলোচনা শান্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে—কিন্তু বর্তমান প্রতিরক্ষা নেতাদের মন্তব্য এবং সীমান্তে ঘটে যায়া সাম্প্রতিক ঘটনার আলোকে দেখা যাচ্ছে যে, আলোচনা ব্যর্থ হলে পরিস্থিতি দ্রুত তীব্র মাত্রায় রূপ নিতে পারে।