বিয়ারিং প্যাড দুর্ঘটনায় স্থগিত আগারগাঁও–মতিঝিল মেট্রোরেল চলাচল

মেট্রো লাইনের একটি বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার ঘটনায় আপাতত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ।

রোববার দুপুরে ফার্মগেট এলাকায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যন্ত্রাংশ না আসায় ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি এখনই মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করা যাচ্ছে না। বর্তমানে ট্রেন চলবে আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত।

এর আগে ডিএমটিসিএলের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেজে জানানো হয়, কারিগরি বা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে এবং ধৈর্য ও সহযোগিতা কামনা করে। পরবর্তীতে বেলা ৩টার দিকে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ফার্মগেট এলাকায় মেট্রো লাইনের একটি বিয়ারিং প্যাড নিচে পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু ঘটে। তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন জানান, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনের ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় ওই ব্যক্তির মাথায় ওপর থেকে বিয়ারিং প্যাডটি পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

সাধারণত সেতু বা উড়ালসেতুর কম্পন রোধে ইলাস্টোমেরিক বিয়ারিং প্যাড ব্যবহার করা হয়। এই প্যাড নিওপ্রেন বা প্রাকৃতিক রাবার দিয়ে তৈরি, যা পিয়ারের সঙ্গে ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে স্থাপন করা হয়। কোনো কোনো প্যাডের ভেতরে থাকে একাধিক স্তরের স্টিল কাঠামো, যার উপরে থাকে রাবার। এই প্যাডগুলো ওজনে বেশ ভারী হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্যাডটি পড়ার সময় একজন পথচারী নিহত হওয়ার পাশাপাশি ফুটপাতে একটি চায়ের দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, “এখনই এটি চালু করা যাবে না। বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়িত্ব নেবে কে?”

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনা তদন্তে সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রউফকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, এর আগে একই ধরনের ঘটনায় করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও তারা পর্যালোচনা করবে, যাতে কোনো ত্রুটি বা অবহেলা থেকে থাকলে তা শনাক্ত করা যায়।