নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপে পরিস্থিতি বুঝে নতুন কিছু যুক্ত করার সুযোগ রয়েছে। ভোট সামনে রেখে প্রতিটি বিষয়ই চ্যালেঞ্জস্বরূপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান ইসির এগুলো সামাল দেওয়ার যথেষ্ট দৃঢ়তা রয়েছে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সরকারের হলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতা নেওয়া হবে।
সচিব আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ থাকলে কর্মপরিকল্পনায় তা যুক্ত করা হতে পারে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে রোডম্যাপ ঘোষণা করেন আখতার আহমেদ। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন রোডম্যাপটি অনুমোদন দিয়েছে।
দুই ডজন কাজের পরিকল্পনার মধ্যে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ও রয়েছে। রোডম্যাপ অনুযায়ী ভোট রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনের প্রায় দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করবে।
‘প্রতিটি বিষয়ই চ্যালেঞ্জ’
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা কর্মপরিকল্পনা দিলাম, সব কিছু হয়ে গেল, তা নয়। এটি চলমান থাকবে। নতুন নতুন পরিস্থিতিতে নতুন নতুন কাজ আসে, এগুলো সম্পূরক কাজ হিসেবে নেওয়া হবে। প্রতিটি বিষয়ই চ্যালেঞ্জের। আগামীতে আমার জীবনে দুর্ঘটনা ঘটবে না, তা কি আমি জানি? তাই প্রত্যেকটি জিনিসেই চ্যালেঞ্জ থাকবে। এসব মোকাবেলায় মানুষের প্রস্ততি থাকা প্রয়োজন। না জেনে বাতাসের সঙ্গে তলোয়ার চালানো যায় না। চ্যালেঞ্জ আসবে, পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে, যার জন্য মানসিক দৃঢ়তা থাকা দরকার, যা আমাদের সবার রয়েছে।”
বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয় হলেও প্রয়োজনে ইসি সচিব বলেন, “মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে যেখানে যতটুকু প্রয়োজন হবে, আমরা করব। ভবিষ্যত দ্রষ্টা আমরা নই। ভবিষ্যতে যেটা আসবে, তা সামাল দিতে যা করতে হবে, আমরা করব।”
২৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার বিষয়টিও কর্মপরিকল্পনায় রয়েছে।
সিসি ক্যামেরা ও বডি ক্যামেরার বিষয়
ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বা ‘বডি ক্যাম’ ব্যবহারের বিষয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন সচিব। প্রয়োজন হলে ইসির অংশগ্রহণের বিষয় আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ হবে।
রাজনৈতিক দলের মতামতও সংযোজনযোগ্য
রোডম্যাপে রাজনৈতিক দল সন্তুষ্ট হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মতামত থাকলে সংযোজন করা হতে পারে। সংলাপ পরবর্তী সংশোধনের প্রয়োজন হলে আমরা কর্মপরিকল্পনায় তা সংযোজন করব। কতটুকু লাগবে, তা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।”
এআই অপপ্রচার রোধ ও ভোটার উপস্থিতি
সচিব বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার, অপপ্রচার, মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশন রোধ একটি চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়া ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও বড় চ্যালেঞ্জ।
পার্বত্য এলাকায় হেলিকপ্টার ব্যবহার
ভোটার তালিকা থেকে ভোটের ফল প্রকাশ পর্যন্ত দুই শতাধিক কাজের ফর্দ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনী কাজে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। ভোটের ৮-১০ দিন আগে স্বচ্ছ ব্যালট পেপারসহ আনুষঙ্গিক সামগ্রী আনার জন্য বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহারের বিষয়ে যোগাযোগ করা হবে।
সচিব আরও বলেন, গণভোট বা গণপরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে ইসির কোনো এখতিয়ার নেই।