ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ‘ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়ানোর’ অভিযোগ তুলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বলেছে, এ ধরনের অপপ্রচার গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্ন করবে।
অনলাইনে অপপ্রচারের বিষয়ে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ডাকসু ভোটের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “আমরা দেখছি, মাঠের রাজনীতিতে পেরে না উঠে, শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যর্থ হওয়ার পর অনেকেই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনেক সংগঠন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। এ ধরনের কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের যে গণতান্ত্রিক নির্বাচনি পরিবেশ, সেটিকে বিঘ্ন করবে।”
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একাধিকবার অভিযোগ জানানোর পর শনিবার তার অগ্রগতি জানতে আসা হয়েছে। এর আগে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অনলাইনে হেনস্তা, হয়রানি ও অপপ্রচারে লিপ্ত ফেসবুক গ্রুপ নিষিদ্ধকরণ এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। অভিযোগ জানানোর সময় ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনও উপস্থিত ছিলেন।
মায়েদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা কাজ করছেন। কিন্তু নামে-বেনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে যে গ্রুপগুলো আছে, তার মডারেটর বা অ্যাডমিনরা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী হলেও শিক্ষকদের প্রতি যথেষ্ট সম্মানসূচক আচরণ করছেন না। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার শতভাগ প্রয়োগ করতে পারুক এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন পরিবেশ উপহার দিতে পারি।”
মায়েদ আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। “ভোটাররা দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের সেই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। ক্যাম্পাসের বর্তমান পরিবেশে আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন এবং পছন্দের প্রার্থী বাছাই করবেন।”
একই দিনে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ভোট প্রচার চালান ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ভোটাধিকারের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই সংগ্রাম করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সূচনা হতে যাচ্ছে গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকারের। ৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সেই পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করছি এবং অন্য কোনো বিষয়ে আপাতত মনোযোগ দিচ্ছি না।”
জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলোর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “৫ অগাস্ট পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে অনৈক্যের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটা একটি রাজনীতিকরণের অপচেষ্টা। আওয়ামী রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে ঘৃণা করে যারা দীর্ঘ সময় লড়াই সংগ্রাম চালিয়েছেন, তাদের ফ্রেমিং এবং ট্যাগিং করা হয়েছে, তখন উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে।”
আবিদুল ইসলাম খান মন্তব্য করেন, “আমরা নোংরা রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যেতে চাই না। আমরা দেশ ও ক্যাম্পাসজুড়ে এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রচলন করতে চাই, যেখানে শ্রদ্ধা, স্নেহ, সহনশীলতা ও সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে বিতর্ক হবে। কথা কাটাকাটিও হবে, কিন্তু দিনের শেষে আমরা এক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকব রাষ্ট্রের স্বার্থে।”