বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, অর্থনৈতিক দুরবস্থা, লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মামলা বাণিজ্য ও মব সন্ত্রাস চলছে। এর মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কি না, তা সরকারকে ভাবতে হবে।
আনিসুল ইসলাম বলেন, সরকার বলছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। জাতীয় পার্টিও নির্বাচন চায়। কিন্তু তার আগে দেশে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের যৌথ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল ইসলাম বলেন, দেশে এখনো মামলা বাণিজ্য চলছে। সরকার নতুন আইন করলেও তার কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, “সরকার বলেছে দ্রুত তদন্ত করে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট দিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো সেই আইনের প্রভাব নেই। যাঁরা নির্বাচন করবেন, তাঁদের নামে যদি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়, তাঁরা কীভাবে এলাকায় গিয়ে প্রচারণা চালাবেন, সরকার তা নিয়ে কিছু বলছে না।”
তিনি আরও বলেন, যথাযথ নিয়ম ও আইনি প্রক্রিয়া মেনে জাতীয় পার্টির কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। তাই দলীয় প্রতীক লাঙ্গল তাদের কাছেই থাকবে।
ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেল বিজয়ী হওয়ায় অভিনন্দন জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, “এই নির্বাচন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বড় দলের অনেক কর্মী থাকতে পারে, কিন্তু জনসমর্থন না থাকলে নির্বাচনে কী ফল হয়, সেটা ডাকসুতে প্রমাণ হয়েছে।”
একই সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারও শিবিরকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “ডাকসুতে মানুষের ভালোবাসার বিজয় হয়েছে। সঠিক রণকৌশল, কঠোর পরিশ্রম, পরিবর্তন ও বিবর্তনের পক্ষে ছাত্ররা রায় দিয়েছে। আমরা এ রায়কে সম্মান করি। এই নির্বাচনে ছাত্রশিবির জিতেছে, তাদেরকে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল এবং গত বছর ৫ আগস্টের গণ–অভ্যুত্থান বা জুলাই বিপ্লব থেকে শিক্ষা নিতে হবে। অহংকার–দম্ভ করলে কীভাবে পতন হয়, তার ফল ডাকসু নির্বাচন এবং জুলাই বিপ্লব আমাদের শিখিয়ে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি গত ৩৫ বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে রয়েছে। “কেউ আমাদের বন্ধু ছিল না। জেল–জুলুম, অত্যাচার–নির্যাতন সহ্য করেছি। হয়তো রাজনৈতিক কৌশলের কারণে বিভিন্ন সময়ে কোনো না কোনো দলের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক বন্ধুত্ব হয়েছে। আগামী দিনেও হতে পারে।”
সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো–চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, কেন্দ্রীয় নেতা সাহিদুর রহমান, নাসরিন জাহান, লিয়াকত হোসেন, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ প্রমুখ।