বিদেশে বৈঠকে নির্বাচন নির্ধারণ ‘জনপ্রত্যাশার সঙ্গে প্রতারণা’: এনসিপি

জনপ্রত্যাশা ছাপিয়ে বিদেশের মাটিতে নির্বাচন নিয়ে বৈঠক করে দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী।
এমন সিদ্ধান্তকে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার সঙ্গে ‘প্রতারণার সামিল’ বলেও অভিযোগ তার। প্রয়োজনে ‘নতুন একটি গণঅভ্যুত্থানের’ জন্ম দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, এপ্রিলের বদলে জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে এনে সব প্রস্তুতি শেষ হলে আগামী রোজার আগে ভোট আয়োজন করা হতে পারে।

এ বিষয়ে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া গণ অভ্যুত্থানের নেতাদের দল এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেন।

তিনি বলেন, “মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে, বিচারের প্রশ্নে সরকার থেকে কোনো বার্তা দেখিনি। শুধু একটি দলকে খুশি করার জন্য বাংলাদেশকে নির্বাচনি সড়কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খার সঙ্গে প্রতারণার সামিল। ১৯৯০ সালেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা সামাজিক চুক্তি হয়েছিল। পরবর্তীতে বাংলাদেশকে পুরোনো রাজনীতিতে ফেরত নেওয়া হয়েছিল।”

লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠকে নির্বাচন এগিয়ে ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে বার্তা এলেও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আগের দলীয় অবস্থান বদল না করার কথা বললেন এনসিপির নেতারা।

তারা জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আগে আগের মতোই রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান বিচারকে শর্ত হিসেবে রাখতে চায়।

আবার এককভাবে বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণের সরকারের পদক্ষেপের সঙ্গেও দ্বিমত প্রকাশ করেছেন তারা।

মুখ্য সমন্বয়ক নাসির বলেন, “এবার বিদেশের মাটিতে বৈঠক হয়েছে। যেখানে গণঅভ্যুত্থান, শহীদের রক্ত এখনও পড়ে আছে, আহতরা এখনও হাসপাতালে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের মাটিকে অবজ্ঞা করে বিদেশের মাটিতে এই ধরনের মিটিং হয়। জনপ্রত্যাশা ও জাতীয় প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে একটা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।

“পেছনের দিকে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হয়তো আমাদেরকে নতুন একটি গণঅভ্যুত্থানের জন্ম দিতে হবে।”

দলের আরেক নেতা জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান বিচার সম্পন্ন হওয়ার পর যেকোনো সময় নির্বাচনে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এটা অনেক আগে থেকেই আমরা বলে আসছি।

“তবে কেবল একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে অন্যান্য রাজনৈতিক দল, গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে এই তারিখ ঘোষণা করা যেতে পারে।”