চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বন্দরগুলোর দক্ষতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক অপারেটরের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “বর্তমানে আমরা আমাদের বন্দরগুলো দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করছি। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে আরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগের মাধ্যমেই একটি বন্দর বিশ্বপরিসরে প্রবেশ করতে পারে।”
শুক্রবার সকালে এনসিটি পরিদর্শনে গেলে উপদেষ্টার সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সিডিডিএলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ৭ জুলাই ছয় মাসের জন্য এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয় চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডকে (সিডিডিএল), যা পরিচালিত হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনে। এর আগে এনসিটি পরিচালনায় ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড।
বর্তমানে সরকার সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে এনসিটির স্থায়ী পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এ সময় পর্যন্ত পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে সিডিডিএল।
নৌ উপদেষ্টা বলেন, “পুরোনো অপারেটরের পরিবর্তে আমরা নতুন অপারেটর নিয়োগ করতে যাচ্ছি, যার একমাত্র লক্ষ্য দক্ষতা বৃদ্ধি। এতে আমার ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই—আমি এমনকি চট্টগ্রামের বাসিন্দাও নই।”
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের সম্পদ এবং এটি আমাদের হাতেই থাকবে। কেউ যদি ভিন্নভাবে অপপ্রচার চালায়, আশা করি তারা দেশের স্বার্থে তা আর করবে না। আমরা পেছনে থাকতে চাই না, বৈশ্বিক অঙ্গনে প্রবেশ করতে চাই।”
সাইফ পাওয়ারটেক সম্পর্কে তিনি বলেন, “১৭-১৮ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি এনসিটি ও আরেকটি টার্মিনাল পরিচালনা করেছে। তারা ভালো করেছে, তবে সরকার এখন আরও দক্ষ পরিচালনার উদ্যোগ নিচ্ছে।”
সিডিডিএল দায়িত্ব নেওয়ার পর অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, “এনসিটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং গড়ে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। ভবিষ্যতে যেসব বিদেশি অপারেটর আসবে, তাদের অধীনেও এই উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।”
নৌ উপদেষ্টা জানান, বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই। “মন্ত্রণালয় এককভাবে মাশুল বাড়ায়নি। ব্যবহাকারী ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্বমানের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল এখনো অনেক কম।”
চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী জানান, সিডিডিএল দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৭ দিনে জাহাজের গড় অবস্থান ১০ ঘণ্টা কমেছে এবং কনটেইনার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ শতাংশ।