ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছে দুই শিক্ষার্থী।
শনিবার বিকাল ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন।
ছাড়পত্র পাওয়া শিক্ষার্থীদের একজন ১২ বছর বয়সী আয়ান খান; আরেকজন একই বয়সী রাফসি আক্তার রাফিয়া। দুইজনই এক শতাংশ দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলো।
নাসির উদ্দীন বলেন, “আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আরও ১০ জনকে আমরা রিলিজ দিতে পারব।”
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়ান খানের বাবা মোস্তফা কামাল বাপ্পী বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, সে সুস্থ আছে, চিন্তার কিছু নাই। যতটুকু বার্ন হয়েছিল হাতে, এখন ঠিক আছে। কানে একটু সমস্যা আছে, আশা করছি সেটিও ঠিক হয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “দোয়া করি প্রত্যেকটা সন্তানকে আল্লাহ তার মা-বাবার কোলে ফিরায়ে দিক।”
এদিন সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ১৩ বছর বয়সী সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিফ ফারহান মারা যায়। এর ঘণ্টাখানেক পর মৃত্যু হয় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আয়া মাসুমার।
দুজনের মৃত্যুর দুঃসংবাদ দেওয়ার পরপরই সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসাধীন দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র দেওয়ার তথ্য জানান হাসপাতালটির পরিচালক।
তিনি বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউটে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে রয়েছে চারজন এবং গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন আরও নয়জন। তার ভাষ্য, “ক্রিটিক্যাল যারা, প্রতি মুহূর্তেই তাদের ব্যাপারে যেকোনো সংবাদ পাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকি।”
তিনি জানান, ভারত থেকে আসা টিমে রয়েছেন দুজন ডাক্তার ও দুজন নার্স, চীন থেকে এসেছেন তিনজন ডাক্তার ও দুজন নার্স এবং সিঙ্গাপুর থেকে নয়জন এসেছেন, যাদের মধ্যে তিনজন ডাক্তার, বাকিরা সাপোর্টিং স্টাফ।
পরিচালক বলেন, “বিভিন্ন টিম যেগুলা আসছে, তাদের সঙ্গে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবাই মিলে আমাদের মাল্টি ডিসিপ্লিনিয়ারি টিমসহ বসে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এজন্য যা করার দরকার, তাই করেছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা আমাদের সঙ্গে একমত।”
দুজনকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩৬ জন। সব হাসপাতাল মিলে চিকিৎসাধীন সংখ্যা ৪৬।
সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের মুখে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই শিশু।