মোহাম্মদপুর থানার ওসির অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ, ‘ছিনতাইয়ের অভিযোগে গড়িমসি’র অভিযোগ

ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের গড়িমসির প্রতিবাদে মোহাম্মদপুর থানার ওসির অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

শুক্রবার বিকেল ৫টায় থানার সামনে আয়োজিত এই বিক্ষোভে তারা ওসি আলী ইফতেখার হাসানের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার পাশাপাশি চাঁদাবাজ, চোর চক্র ও ছিনতাইকারীদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ তোলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে মোহাম্মদপুরে এক বাসিন্দা মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে, অভিযোগ নেওয়ায় গড়িমসি করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ভুক্তভোগী জানান, অভিযোগ দেওয়ার পর ওসি আলী ইফতেখার হাসান তাকে বলেন, “আমি ওসি হয়েও এই কমদামি ফোন ব্যবহার করি, আপনি এত দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই।”

তিনি আরও বলেন, থানায় গিয়ে অভিযোগ লেখার জন্য অতিরিক্ত লোক নেই বলে তাকে সহযোগিতা করা হয়নি। পরে কাগজ দিলেও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য কলম না থাকার কথা জানান।

ঘটনার পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় আসে। এরপর দায়িত্বরত এসআই জসিম উদ্দীন, এএসআই মো. আনারুল ইসলাম এবং দুই কনস্টেবল মো. মাজেদুর রহমান ও মো. শিহাব উদ্দিন শিহাবকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা।

এছাড়া শুক্রবার দুপুরে বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাই হওয়া ফোনটি উদ্ধার ও তিনজন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের তথ্যও দেন তিনি।

বিকেলে থানার সামনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া পারভেজ হাসান সুমন বলেন, “ওসির বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই বাসিন্দাদের সঙ্গে অসদাচরণ, আইনি সহায়তা না দেওয়াসহ নানা অভিযোগ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীদের সঙ্গে আঁতাত করে চলেন।”

তিনি বলেন, “ওসির বিরুদ্ধে কথা বললে উল্টো সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয় কি না, তা পুলিশ প্রশাসনই জানে। আমরা দ্রুত ওসির অপসারণ চাই।”

স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, “ওসির নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই কথা বলছি। অভিযোগের পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

তারা জানান, থানায় সেবা নিতে গেলে নানাভাবে অসদাচরণের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

ওসি আলী ইফতেখার হাসানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা বলেন, ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তাধীন।

এ বিষয়ে একটি ফেসবুক পোস্টে পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ঘটনাটি দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ‘অসদাচরণের জন্য’ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।