গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় সরকারি জমিতে গড়ে ওঠা ১৫৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। এতে দখলমুক্ত হয়েছে সাড়ে চার একরেরও বেশি জমি।
সোমবার সকাল থেকে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের পারাবর্তা এলাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৪ ও ২৫ নম্বর সেক্টরে এই অভিযান পরিচালিত হয় বলে জানান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ।
অভিযানে নির্বাহী হাকিম তনিমা আফ্রাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন ঊর্মি। অভিযানে পুলিশ, র্যাব ও আনসারসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন।
সম্প্রতি সরকার পূর্বাচলের ২৪ ও ২৫ নম্বর সেক্টরের ১৪৪ একর এলাকাকে ‘বিশেষ জীববৈচিত্র্য এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে। অঞ্চলটি নানা প্রজাতির গাছ, পাখি, পোকামাকড় ও ছোট প্রাণীতে সমৃদ্ধ। এ কারণে এখানে যেকোনো ধরনের নির্মাণ, দখল বা কৃষিকাজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইউএনও তনিমা আফ্রাদ জানান, “সরকারি এসব জমি দখল করে অন্তত ৪৪ জন ব্যক্তি ১৫৫টি স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন। এসব স্থাপনার কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। দুপুর পর্যন্ত সব স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৪ দশমিক ৬০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে।”
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ইন্সপেক্টর নিগার সুলতানা বলেন, সরকার পরিবেশ, বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, সরকারি হিসাবে দেশের বনভূমির পরিমাণ ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং বৃক্ষাচ্ছাদিত এলাকা রয়েছে ২২ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এই হার ২৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সামাজিক বনায়ন, সংরক্ষিত বন, উপকূলীয় বনায়ন ও গ্রামীণ বন উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, সোমবারের অভিযানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকার প্রায় ৪ দশমিক ৬০ একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে।
ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, “এলাকাটি পরিবেশগতভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই এলাকার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”