গাজীপুরে জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গুলিতে এক ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি আবদুল মান্নান জানান, নিহত ইলিম হোসেনের ‘সহযোদ্ধা’ পরিচয়ে আবু সাইদ রাজু নামে এক ব্যক্তি রোববার রাতে মামলাটি করেন। এতে ৪২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত ইলিম হোসেন (৪৩) কালিয়াকৈর উপজেলার রাখালিয়াচালা এলাকার বাসিন্দা। মামলার বাদী আবু সাইদ রাজু হরিণহাটি এলাকার সেকান্দার আলীর ছেলে।
ওসি জানান, মামলার পর তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সময় ইলিম হোসেন সফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমির সামনে গুলিবিদ্ধ হন। সেদিন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ ইলিম হোসেনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফন করেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা মিজান হোসেন, চান্দু মেম্বার, মোহসিন, আবদুর রাজ্জাক, আলমগীর হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা হাসান মৃধা ও যুবলীগ সদস্য রফিকুল ইসলাম।
তবে নিহত ইলিম হোসেনের স্ত্রী সোনিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা কোনো মামলা করিনি। কে মামলা করেছে, সেটাও আমাদের জানা নেই।”
মামলার বাদী আবু সাইদ রাজু সাংবাদিকদের বলেন, “ইলিম হোসেন আমার সহযোদ্ধা ছিলেন। তার পরিবার মামলা করতে চায়নি। আমি ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলা করেছি। নিহতের পরিবারের সদস্য এবং আন্দোলনের অন্যান্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনার পর মামলা দাখিলে সময় লেগেছে।”