জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ৬ অগাস্ট এ বিষয়ে আদেশ দেবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই তারিখ নির্ধারণ করেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন কৌঁসুলি মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আজকে আবু সাঈদ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। আসামিদের কয়েকজনের পক্ষে আজ শুনানি হয়। এখানে ওনারা মূলত অব্যাহতি চেয়েছেন। আমরা এ বক্তব্য খণ্ডন করে উত্তর দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “কমান্ড রেসপনসিবিলিটি মানে এ নয়, কাউকে কমান্ড করতে হলে ঘটনাস্থলে থাকতে হবে। কেউ উপস্থিত না থেকেও অধস্তনদের নির্দেশ দিতে পারেন।”
কৌঁসুলি মিজানুল ইসলাম জানান, মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আলাদা করে বিবেচনা করা হয়েছে। অভিযোগে তাদের সুনির্দিষ্ট ভূমিকার উল্লেখ রয়েছে। অডিও, ভিডিও, সিসিটিভি ফুটেজসহ প্রমাণাদি দাখিল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এ ঘটনায় ‘প্রাইমা ফেসি’ নাই – এটা আসামি পক্ষ প্রমাণ করতে পারে নাই। এ বিষয়টা আমরা ট্রাইব্যুনালকে বলেছি।”
এর আগে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন।
বুধবার শুনানির সময় ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন সাবেক এসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশ, রাফিউল হাসান রাসেল এবং আনোয়ার পারভেজ আপিল।
মঙ্গলবার সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশের অব্যাহতির শুনানি হয়। বুধবার বাকিদের পক্ষে শুনানি শেষে প্রসিকিউশন তাদের জবাব দেয়।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু ঘটে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ৩০ জুন মামলায় অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল এবং পলাতক ২৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তদন্ত প্রতিবেদনে ৩০ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে আসে।
১৩ জুলাই পলাতক ২৪ আসামির নামে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকা রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ আপিলকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাজির করতে বলা হয়।
পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত চারজন আইনজীবী অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অংশ নেন।