ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) থেকে ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, শতবর্ষী এ শিক্ষায়তনের চেহারা পাল্টে যাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রতিষ্ঠান, জাতিকে যার একাডেমিক দিক থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিগত সময়ে আমাদেরকে সে সুযোগ দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা আশা করি এবার সে বঞ্চনার অবসান ঘটবে।”
গত রোববার একনেক সভায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদন করা হয়। ২০৩০ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি একাডেমিক ভবন, ২ হাজার ৬০০ ছাত্রের জন্য চারটি ও ৫ হাজার ১০০ ছাত্রীর জন্য পাঁচটি আবাসিক হল নির্মাণ করা হবে। শিক্ষকদের জন্য দুটি ও কর্মকর্তাদের জন্য আরও দুটি আবাসিক ভবন এবং পাঁচটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, প্রকল্পের আওতায় জলাধার এবং সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি বিদ্যমান সার্ভিস লাইন মেরামত এবং একটি খেলার মাঠ উন্নয়ন করা হবে। সবুজায়নের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ৮ শতাংশ জায়গা বাড়বে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, “এই টাকাটি জনগণের করের টাকা। যতটুকু কার্যকরভাবে ব্যয় করতে পারি, আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। এটি শুধুমাত্র অবকাঠামোর জন্য নয়, একাডেমিক পরিবেশকে দৃঢ় করতেও কাজে লাগবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বর্তমানে মাত্র ৪০ শতাংশ আবাসন আছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আরও ১৮ শতাংশ যোগ হবে। এরপরও সংকট থাকবে, তাই ভবিষ্যতে আবারও প্রস্তাব জানানো হবে।”
প্রকল্পে যেসব নির্মাণ হবে:
- কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশের ভবন ভেঙে ১২ তলা ও ৬ তলা দুটি ভবন
- আইএসআরটি ও ফার্মেসি বিভাগের জন্য ১০ তলা ভবন
- উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে ৩ তলা ভবন
- চারুকলা অনুষদের পুরনো ভবন ভেঙে ৫ তলা একাডেমিক ভবন
- বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে ১০ তলা এমবিএ টাওয়ার
- প্রেস বিল্ডিং ও নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে দুটি একাডেমিক ভবন
- শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, সূর্যসেন, শহীদুল্লাহ, মুহসীন ও কুদরাত-ই-খুদা হলে সম্প্রসারণ ভবন
- ছাত্রীদের জন্য শাহনেওয়াজ, শামসুন নাহার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে ১০-১৫ তলা ভবন
- প্রতিটি হলে ২০টি ফ্ল্যাটসহ ১১তলা শিক্ষক কোয়ার্টার
- উপ-উপাচার্যের বাংলো, ১৫ তলা আবাসিক ভবন, ডাকসু মাল্টিপারপাস ভবন
- প্রশাসনিক ভবনের উত্তর-পশ্চিমে ২০ তলা ও দক্ষিণ-পূর্বে ৪ তলা ভবন
- কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গ্যালারি, বাস পার্কিং, অফিস, ডরমিটরি
- ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার ভবন
- ৪ তলা মসজিদুল জামিয়া কমপ্লেক্স
- জলাধার সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধন, সড়ক, সার্ভিস লাইন, ২৪ হাজার ৮২০ মিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা