রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম রিভিউ: রায়ের জন্য দিন নির্ধারিত ৬ অগাস্ট

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম নিয়ে দায়ের করা রিভিউ মামলার রায় ঘোষণা করার জন্য আগামী ৬ অগাস্ট দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বুধবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বেঞ্চ শুনানি শেষে রায়ের এই দিন নির্ধারণ করেন। দ্বিতীয় দিনের মতো এদিন শুনানি হয়। এর আগে মঙ্গলবারও শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, রুহুল কুদ্দুস কাজল, সালাহউদ্দিন দোলন ও এহসানুল করিম।

‘রুলস অব বিজনেস’ অনুযায়ী ১৯৮৬ সালে সরকার ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ তৈরি করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে। ২০০০ সালে এটি সংশোধন করা হয়। সংশোধিত ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৬ সালে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব আতাউর রহমান।

প্রাথমিক শুনানি শেষে হাই কোর্ট রুল জারি করে জানতে চায়, জেলা জজদের পদমর্যাদা সচিবদের নিচে দেখানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।

রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট রায় দিয়ে আটটি নির্দেশনা দেয় এবং সরকারকে সে অনুযায়ী নতুন তালিকা তৈরিতে ৬০ দিন সময় বেঁধে দেয়।

হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ ২০১৫ সালে রায় দেয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন।

রায়ে বলা হয়—

১. সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, তাই রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদার শুরুতে সাংবিধানিক পদাধিকারীদের গুরুত্ব দিতে হবে।
২. জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচারকদের পদমর্যাদা সচিবদের সঙ্গে সমমর্যাদায়, অর্থাৎ ২৪ থেকে ১৬ নম্বরে উন্নীত করতে হবে।
৩. অতিরিক্ত জেলা জজদের অবস্থান হবে রাষ্ট্রীয় ক্রমে জেলা জজদের পর, অর্থাৎ ১৭ নম্বরে।

রায়ে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম কেবল রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে। নীতি নির্ধারণ বা অন্য কোনো কার্যক্রমে এটি ব্যবহার করা যাবে না।

রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা জানিয়েছিলেন, হাই কোর্টের রায় আংশিক পরিবর্তন করে আপিল বিভাগের রায় দেওয়া হয়েছে। তাতে একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এবং বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তদের যথাযথ সম্মান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তিনি জানান, সাংবিধানিক পদাধিকারীদের অন্যান্য পদের উপর অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।

গত ৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদার ক্রম নির্ধারণে দ্রুত রিভিউ শুনানির আবেদন করে বিচারকদের সংগঠন জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সেই শুনানি শেষে এখন বিষয়টি রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে।