জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ‘বেঈমানি’ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাবেক নেতা রেজা কিবরিয়া। তার দাবি, দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বর্তমান সরকার ব্যর্থ হয়েছে এবং নতুন করে ‘বিপ্লবের সম্ভাবনা’ তৈরি হয়েছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জনতা পার্টি বাংলাদেশের এক আলোচনা সভায় রেজা কিবরিয়া বলেন, “জুলাই-অগাস্টের শহীদদের সাথে বেইমানি করেছে এই সরকার, এ সম্বন্ধে আমার কোনো সন্দেহ নাই। আমরা যে আশা করেছিলাম দেশ পরিচালনায় গুণগতমানের পরিবর্তন দেখবো, সেটা হয়নি।”
তিনি বলেন, “প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গুটি কয়েক এনজিওর লোক এবং চাটগাঁইয়া লোক সরকারে ঢুকিয়ে কী ধরনের সরকার গঠন করেছেন সেটা উনি ভালো বোঝেন। একজন এনজিওওয়ালা দেশ চালনায় দক্ষ হবেন—এর কোনো ভরসা নেই। যাদের নিয়েছেন তারা অদক্ষ; দুঃখের বিষয় তারা অসৎ।”
রেজা কিবরিয়ার মন্তব্য, শেখ হাসিনার সরকারের পর এত নিম্নমানের সরকার আসবে তা তিনি ভাবেননি। তিনি বলেন, “আমরা শতকরা ৫ ভাগ উন্নতি আশা করেছিলাম, সেটাও পাইনি। এখন বিপ্লবের পথ হারিয়ে ফেলেছি।”
তিনি আরো বলেন, “এরা যে কষ্ট করেছে এক বছর, দেশ ছেড়ে অনেককে পালাতে হবে। এমন কাজ করেছে যে সামনের সরকার এলে তাদের পালাতে হবে।”
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সমালোচনা করে রেজা কিবরিয়া বলেন, “সে কী আনিসুল হকের চেয়ে ভালো? আমার তো মনে হয় না। ছাত্রদের হয়ে বসেছে, কিন্তু ছাত্ররা ঠকেছে। তারা বুঝতে পেরেছে, বড় ভুল করেছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু ছাত্র দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে, যা আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল না। উপদেষ্টাদের হাতে সংস্কার দেওয়া ভুল হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, “এদের হাতে সংস্কার হবে—এটা বিশ্বাস করি না। এরা নিরপেক্ষ নয়, বরং একটি দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করছে। আমি মনে করি নতুন একটা বিপ্লব হতে পারে। তবে বারবার বিপ্লব অস্থিরতা বাড়াবে।”
সভায় জনতা পার্টির মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেন, এই সরকার কীভাবে নির্বাচন করবে তা স্পষ্ট নয়। তিনি মন্তব্য করেন, “সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আবার ফ্যাসিবাদে ফিরে যাওয়া হবে। প্রতিদিনই ড. ইউনূস তার সমর্থন হারাচ্ছেন, কারণ বিএনপির দিকে ঝুঁকে ‘সেইফ এক্সিট’ খুঁজছেন—এমন ধারণা তৈরি হয়েছে।”
জনতা পার্টির উপদেষ্টা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন তারেক রহমান আগামী প্রধানমন্ত্রী হবেন, কিন্তু তিনি যদি লুটতরাজ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন তাহলে দেশ কীভাবে চালাবেন—এ প্রশ্ন থেকেই যায়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জনতা পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার মিলন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি মহসীন রশিদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি এ কে এম আশরাফুল হক, জাতীয় সংস্কার জোটের আহ্বায়ক মেজর আমিন আহমেদ আফসারী।