বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন মোটেও নিরপেক্ষ ছিল না। তার মতে, এটি পরিকল্পিতভাবে একটি সাজানো নির্বাচন ছিল, যেখানে কে কোথায় নির্বাচিত হবেন, তা নির্বাচনের আগেই নির্ধারণ করা হয়ে গিয়েছিল।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদ ও আহতদের অমর কীর্তিগাথা স্মরণে’ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দের ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মঈন খান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এক-এগারোর সরকার বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের জন্য একটি অসৎ পরিকল্পনা করেছিল, যা পরবর্তী সময়ে ব্যর্থ হয়। সেই সময় দেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেটা শুধু বাংলাদেশে নয়, জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বে সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবে প্রচার করা হয়েছিল। তবে মঈন খান উল্লেখ করেন, “২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভোটের কয়েক দিন আগে সংসদের ৩০০ আসনের কে কোথায় নির্বাচিত হবেন, তা পূর্বনকশা অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়েছিল।”
মঈন খান বলেন, এক-এগারোর মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, এবং পরবর্তী ১৬ বছর তারা দেশকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় দিক থেকে ধ্বংস করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় শিশু, যুবক, শ্রমিক এবং শিক্ষার্থীরা মারধর ও হত্যার স্বীকার হয়েছিল। তবে এই ঘটনা বাংলাদেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজকে একত্রিত করেছে।
ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা লেখাপড়া করতে হবে, কারণ ভবিষ্যতে তাদেরই দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের সঠিক নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গেও মঈন খান বলেন, ‘দীর্ঘ এক বছর দেশের গণতন্ত্রে রূপান্তরের জন্য তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে গেছে। সর্বশেষ আগামী ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, পরবর্তী সময়ে নির্বাচন কমিশন শিডিউলের (তফসিলের) মাধ্যমে তা নির্দিষ্ট করবে।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দের পক্ষ থেকে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়।