পিরোজপুরের সুখরঞ্জন বালি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমহার সিনহা এবং আরও ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করার কারণে এবং পরে সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার পর তিনি গুম ও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
অভিযোগের সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী তানভীর আল আমিন, মনজুর আহমেদ আনসারী, আবু বকর সিদ্দিক, হাসানুল বান্না সোহাগ এবং মাসুদ সাঈদী। ১০ থেকে ১৫ জনকে ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে বিবাদী করা হয়েছে। তালিকায় আরও রয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিচারক, সাবেক আইনমন্ত্রী, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চিফ প্রসিকিউটর ও প্রসিকিউটর, পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা ও থানা পর্যায়ের রাজনৈতিক ও ছাত্র নেতারা।
সুখরঞ্জন বালি জানিয়েছেন, ২০১০ সালের জুলাই-অগাস্টে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন তাকে ডেকে তার ভাই বিশাবালির হত্যার বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তার ভাইকে হত্যা করেছে। হেলাল উদ্দিন তাকে জোর করে অন্যদের সঙ্গে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বলেন। রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করা হয়।
এরপর সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী তার কাছে আসেন এবং সত্য ঘটনা ট্রাইব্যুনালে বলার জন্য অনুরোধ করেন। সুখরঞ্জন বালি ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে গেলে পুলিশ তাকে চোখ ও হাত বেঁধে ‘অজানা’ স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েক মাস ধরে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে সীমান্ত এলাকায় নেওয়া হয়, যেখানে বিএসএফ তাকে মারধর করে। এরপর বশিরহাটের সাবজেলে ২২ দিন এবং দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়।
কারাগারে থাকাকালীন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা তার সাক্ষাৎ গ্রহণ করে এবং নির্যাতনের বিবরণ নথিভুক্ত করে। দেশে ফিরে তিনি নিরাপত্তার কারণে পিরোজপুরে অবস্থান করতে পারছেন না এবং আত্মগোপনে রয়েছেন।