বরিশালের মুলাদীতে টাকা-স্বর্ণ বিতর্কে দুই ভাইয়ের হাতে এক ভাই অন্ধ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

গচ্ছিত টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে বিরোধের জেরে বরিশালের মুলাদী উপজেলায় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বাবার নির্দেশে অপর ভাইয়ের চোখ উৎপাটনের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় চোখ হারানো ভাইসহ তিন ছেলে বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মুলাদী থানার এসআই মো. মাসুদ।

চোখ হারানো ব্যক্তি সিরাজুল ইসলাম ওরফে রিপন বেপারী (৫০) ওই গ্রামের আরশেদ বেপারীর সেজ ছেলে। অভিযুক্তরা হলেন তার মেজ ভাই রোকন বেপারী ও ছোট ভাই স্বপন বেপারী।

স্থানীয়রা জানান, রিপন দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করতেন এবং চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা ও স্বর্ণালংকার মেজ ভাই রোকনের কাছে গচ্ছিত রাখতেন। প্রায় তিন মাস আগে রিপন ওই টাকা ও স্বর্ণ ফেরত চাইলে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিস বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি।

রিপনের বড় ভাই খোকন বেপারী অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার রাতে ঝগড়ার সময় বাবা আরশেদ বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করেন এবং দুই ভাইকে চোখ উৎপাটনের নির্দেশ দেন। পরে রোকন ও স্বপন মিলে রিপনের চোখ তুলে বাবার হাতে তুলে দেয়।

তবে আরশেদ বেপারী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাতের ঝগড়ার সময় প্রতিবেশীরা এসেছিল, কী ঘটেছে তিনি দেখেননি।

ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত রিপনকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদীর আশুকাঠি হাসপাতালে এবং পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

রিপনের ছেলে আব্দুর রহমান জানান, চাচা রোকনের কাছে রাখা ৩৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণ ফেরত চাইতেই বাবার ওপর এ বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

এসআই মাসুদ বলেন, রিপনের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের অন্তত ৮টি মামলা এবং মুলাদী থানায় হত্যা মামলাসহ ২০টির বেশি মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি নাকি পেট্রোল দিয়ে বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে সুস্থ হওয়ার পর ভুক্তভোগী পক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।