জাকসু নির্বাচনের প্রচারণা শেষ, ভোটারদের দ্বারে দ্বারে প্রার্থীদের আর্জি

জাকসুর ভোটের প্রচারণা ২৮ আগস্ট শুরু হওয়া মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, এরপর কোনো প্রার্থী প্রচারণা চালালে তা আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে গণ্য হবে।

শেষ দিনে প্রার্থীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে—মুরাদ চত্বর, পরিবহন চত্বর, টিএসসি, ক্যাফেটেরিয়া, বটতলা, চৌরঙ্গী, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, টারজান পয়েন্ট, ছাত্র-ছাত্রী হল সংলগ্ন সড়ক এবং বিভিন্ন অনুষদে—শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের ইশতেহার তুলে ধরেছেন। রাতে আবাসিক হলগুলোতে দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের সমস্যা শুনেছেন এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যাখ্যা করেছেন।

শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা (আইবিএ, ৫০তম আবর্তন) তার প্রচারণার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, “জাকসু কোনো এমপি নির্বাচন নয়, এটা একটা দায়িত্ব। আমি প্রচারণায় আমার ফোন দিয়ে ইশতেহার ব্যাখ্যা করে ভিডিও বানিয়েছি। কোয়ালিটি নিয়ে চিন্তা করিনি, কারণ আমার ইশতেহারে শিক্ষার্থীদের জন্য পরিকল্পনা ছিল। লিফলেট বিলি করে শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “পেইজ বুস্টিং, ফটোকার্ড বানানো, বিরিয়ানি খাওয়ানো—এসব আমার দ্বারা হয়নি। আমি ক্লাসের ফাঁকে অনুষদে গিয়ে, মেয়েদের হলে রুমে রুমে গিয়ে ভোট চেয়েছি। সময় কম থাকায় সব রুম কভার করা সম্ভব হয়নি।”

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আরিফুজ্জামান (উজ্জ্বল) বলেন, “প্রচারণার শেষ দিনে আমরা বিভিন্ন অনুষদ, হল এবং শিক্ষার্থীদের আড্ডাস্থলে গিয়ে তাঁদের কাছে আমাদের পরিকল্পনা পৌঁছে দিয়েছি। ভোটারদের ইতিবাচক সাড়া আমাদের আশাবাদী করেছে।”

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবদুর রশিদ বলেন, “গত কয়েক দিনের প্রচারণায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। জয়-পরাজয় নয়, জাকসু নির্বাচন বাস্তবায়িত হওয়াই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।”

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসান বলেন, “প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীদের অভাবনীয় সমর্থন পাচ্ছি। আমরা আশাবাদী, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটে আমরা ঐতিহাসিক জয় পাব।”

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ জানান, “আমরা প্রতিটি হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে আমাদের ইশতেহার পৌঁছে দিয়েছি। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছি।”

‘সংশপ্তক পর্ষদ’ এবং ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থীরাও নারী ক্ষমতায়ন এবং শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন।

ফারিনা বলেন, “আমি জানি না কাল কী হবে, তবে শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ, ভোট দিতে আসুন এবং প্রার্থীর ইতিহাস জেনে ভোট দিন। আপনাদের ভোট জাবির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।”