রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-রাকসু নির্বাচনে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ নামের নতুন একটি প্যানেল ঘোষণা করেছেন সাবেক সমন্বয়করা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।
বুধবার দুপুরে রাকসু ভবনের সামনে সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব এই প্যানেল ঘোষণা করেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৩টি পদের ১৮টিতে মনোনয়ন দিয়েছে এই প্যানেল।
প্যানেলে সহসভাপতি (ভিপি) পদে সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিল বিন তালেব মনোনয়ন পেয়েছেন। তাদের নেতৃত্বেই লড়বে প্যানেল। মেহেদী, আম্মার এবং তালেব জুলাই আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ছিলেন।
এ ছাড়া ক্রীড়া ও খেলাধুলা সম্পাদক পদে ইয়াসিন আরাফাত, সহকারী ক্রীড়া ও খেলাধুলা সম্পাদক মো. মনজু আরিফ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাহবুব আলম মোহন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হেমা আক্তার ইভা, মহিলা বিষয়ক সহকারী সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসী তৃষা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজুর রহমান, মিডিয়া ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ফাহির আমিন, সহকারী মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক শামীম আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক আরিয়ান আহমেদ, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. আহসান হাবিব এবং সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে ঈশিতা পারভীন তিথি লড়বেন।
নির্বাহী সদস্য পদে রয়েছেন সাজ্জাদ হুসাইন, মো. আরিফুল ইসলাম এবং হাবীব হিমেল।
সিনেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে মেহেদী হাসান, সালাহ উদ্দিন আম্মার, আকিল বিন তালেব, মো. জাকির হোসেন, মো. আহসান হাবিব এই পাঁচজন লড়বেন।
এই প্যানেল থেকে যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তাদের অনেকেরই ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে—এমন প্রচার রয়েছে ক্যাম্পাসে। যদিও ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে নিজেদের প্যানেল ঘোষণা করেছে। তার আগ থেকেই ক্যাম্পাসে ‘ডামি প্যানেল’ বা ‘ছায়া দল’ বিষয়টি নিয়ে জোর আলোচনা চলছিল। ফলে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ সেই ডামি বা ছায়া দল কি-না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন ছিল সাবেক সমন্বয়কদের কাছে।
বিষয়টি অস্বীকার করেছেন প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার। তিনি বলেন, “আমার কাছে এই কথাগুলোকে অযাচিত বলে মনে হয়। কারণ আমার বিশ্বাস, শিবির কখনোই এমন কোনো প্যানেল গঠন করবে না যেটা তাদের নিজেদের নয়। তারা আলাদা প্যানেল দিয়েছে। আমরা আলাদা দিয়েছি। এখানে ‘ডামি’ বা ‘ছায়া দল’ হওয়ার কোনো সুযোগই নেই।”
রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে এ পর্যন্ত মোট সাতটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। শিবিরের ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’, ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ফেডারেশনের যৌথ প্যানেল ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’, গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’, ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশের) ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’, ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ’ এবং সাবেক সমন্বয়কদের ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’।
এর আগে ২৮ জুলাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী, ১০ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১১ সেপ্টেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ১৩ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ১৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ভবনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণ শেষে সেদিনই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।