ঢাকায় ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বৈঠকের অভিযোগে গ্রেপ্তার ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগ নেতার জবানবন্দি, কারাগারে প্রেরণ

ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বৈঠকের অভিযোগে গ্রেপ্তার ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফ হাসান অনু আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম দিলরুবা আফরোজ তিথি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ময়মনসিংহ জেলা শাখার এই সাবেক সভাপতির জবানবন্দি নথিবদ্ধ করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জাকির হোসেন।

দুই দিনের রিমান্ড শেষে এদিন অনুকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিবি’র গুলশান বিভাগের ইন্সপেক্টর জেহাদ হোসেন। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়েছেন এবং তা আদালতে নথিবদ্ধ করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, শরিফ হাসান অনুকে দুইদিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে ‘অপারেশন ঢাকা ব্লকড’ পরিকল্পনায় জড়িত থাকার বিষয়টি জানা গেছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উত্তরার প্রিয়াংকা রানওয়ে সিটি, মিরপুর ডিওএইচএস, বসুন্ধরা কে বি কনভেনশন হল ও রূপগঞ্জ থানাধীন সি-সেল রিসোর্টে দেশের বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা গোপনে উপস্থিত হয়ে কর্মশালায় অংশ নেন বলে স্বীকার করেছেন।

এর আগে বুধবার রাতে ঢাকা থেকে আরও চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।

মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরা সংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলিত হয়ে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তারা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন ঢাকায় সমবেত হবেন। তারা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি ও জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন।

এই ঘটনায় ১৩ জুলাই ভাটারা থানার এসআই জ্যোতীর্ময় মন্ডল সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের গ্রেপ্তার দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মেজর সাদিকুল হকের ওই বৈঠকে অংশ নেওয়ার তথ্য পুলিশ জানতে পারে।

এই তথ্যের ভিত্তিতে ওই সেনা কর্মকর্তাকে ১ অগাস্ট হেফাজতে নেওয়া হয় এবং তার পাঁচ দিন পর স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকেও হেফাজতে নেওয়া হয়। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ১২ অগাস্ট তিনি আদালতে ‘দোষ স্বীকার’ করে জবানবন্দি দেন।