শরীয়তপুর জেলার মানুষ প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগের সঙ্গে তাদের জেলার সংযুক্তি না করার দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ‘জাগো শরীয়তপুর’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা ঢাকা-শরীয়তপুর সড়ক অবরোধ করে। প্রায় এক ঘণ্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন আগে সরকার নতুন দুটি বিভাগ করার ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে একটি ফরিদপুর ও অন্যটি কুমিল্লা। প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে ঢাকা বিভাগের শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলা অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়। ঘোষণার পর থেকেই শরীয়তপুরের কয়েকটি সংগঠন আন্দোলন শুরু করে।
২০১৫ সালেও ফরিদপুর বিভাগ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলে ‘জাগো শরীয়তপুর’ শরীয়তপুরকে ঢাকার সঙ্গেই রাখার দাবিতে আন্দোলন করেছিল। এবারও একই দাবিতে তারা রাস্তায় নেমেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সংবাদ সম্মেলন, বিক্ষোভ, প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। আজ দুপুরে কয়েকশ মানুষ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। পরে চৌরঙ্গী মোড়ে সড়কের ওপর বসে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা, যা দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি করে। সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে জেলা ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্রশিবির, সচেতন নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবি, শরীয়তপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব কম, আর ফরিদপুর তুলনামূলক দূরে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও দাপ্তরিক কাজ ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় তারা ঢাকার সঙ্গেই থাকতে চায়। প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুর অন্তর্ভুক্ত করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
‘জাগো শরীয়তপুর’-এর আহ্বায়ক আমিন মোহাম্মদ বলেন, “আমরা ঢাকা বিভাগে যুক্ত থাকতে চাই। ভৌগোলিক অবস্থান ও দূরত্বের দিক থেকে ঢাকার কাছের জেলা শরীয়তপুর। আমাদের চিকিৎসা, শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্য ঢাকার সঙ্গে। তাই শরীয়তপুর জেলাকে কোনো অবস্থাতেই ফরিদপুর বিভাগের সঙ্গে যুক্ত হতে দেওয়া হবে না। আমাদের দাবি না মানা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, “প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগের সঙ্গে শরীয়তপুর জেলাকে না রাখার দাবিতে একটি সংগঠন আন্দোলন করেছে। তারা কিছু সময়ের জন্য সড়কে অবস্থান করেছিল। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে আমাদের অনুরোধে তারা সড়ক ছেড়ে দেয়।”