চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ির বাড়তি মাশুল স্থগিত

অন্যান্য খাতে মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বহাল

চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও প্রাইমমুভার প্রবেশের ওপর বাড়তি হারে যে মাশুল আরোপ করা হয়েছিল, তা পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বর্ধিত মাশুলের প্রতিবাদে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও প্রাইমমুভার মালিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রোববার দুপুরে বন্দর ভবনে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই সিদ্ধান্তের ফলে বন্দরে পণ্যবাহী যানবাহন প্রবেশের ফি আগের মতোই বহাল থাকবে। বৈঠক শেষে মালিকেরা বন্দরে গাড়ি প্রবেশের ঘোষণা দেন। তবে অন্যান্য খাতে বাড়তি মাশুল স্থগিতের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে বন্দরে যানবাহনের প্রবেশ মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি জানান, “যেহেতু এ বিষয়টি দেশের আমদানি-রপ্তানি ও সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই দেশের স্বার্থে বন্দরের কার্যক্রম দ্রুত চালু হওয়া প্রয়োজন।”

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শুধুমাত্র যানবাহন খাতে বৃদ্ধি করা ট্যারিফ স্থগিত থাকবে। মাশুলের হার পুনর্নির্ধারণ করা হবে কি না জানতে চাইলে বন্দর সচিব বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে। অনুমোদন হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”

তিনি আরও জানান, বৈঠকে উপস্থিত শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা আশ্বস্ত করেছেন, তারা কাজে ফিরে যাবেন। বর্তমানে বন্দরের বাইরে প্রায় ছয় হাজার ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান অপেক্ষমাণ রয়েছে, যারা এখন কাজে ফিরবে।

গত ১৫ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ট্যারিফ কার্যকর হয়। এতে বিভিন্ন সেবায় মাশুল আগের চেয়ে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। যানবাহনের প্রবেশ মাশুল ৫৭ টাকা থেকে প্রায় চারগুণ বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করা হয়েছিল।

এর প্রতিবাদে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও প্রাইমমুভার মালিকেরা শনিবার থেকে বন্দরে যানবাহন প্রবেশ বন্ধ রাখেন। পাশাপাশি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও রোববার চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করে।

ফলে বন্দরের অভ্যন্তরে কন্টেইনার ও পণ্য পরিবহন এবং সরবরাহ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। অচলাবস্থা কাটাতে দুপুর ১২টায় বন্দর কর্তৃপক্ষ বৈঠক আহ্বান করে।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান সুমন বলেন, “বৈঠকে বর্ধিত প্রবেশ ফি স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে আমরা আমাদের সংগঠনভুক্ত সবাইকে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছি।”