গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে ‘হালকা’ করতেই ঢাকাই সিনেমার নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
তার কথায়, “নুসরাত ফরিয়াদের গ্রেফতার করে মূলত গণহত্যার বিচারকে হালকা করা হচ্ছে। নুসরাত ফারিয়া গ্রেফতার হলে তিশারাও গ্রেফতার হবে। এমনকি সারাজীবন আওয়ামী লীগের সুবিধা নেওয়ার জন্য ফারুকীও এরেস্ট হওয়ার কথা।”
রোববার গভীর রাতে ফেইসবুক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক হত্যাচেষ্টা মামলায় রোববার সকালে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন নুসরাত ফারিয়া। সোমবার সকালে শুনানি নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
সরকার এবং উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে রাশেদ খাঁন বলেন, “ডামি ৩০০ এমপি ধরার খবর নেই, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ নেই, নুসরাত ফরিয়াদের গ্রেফতার করে হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘লুটপাটের সম্পদ’ এক উপদেষ্টার স্বামী পাহারা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সেই উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী এম এ মান্নান ও সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিন তদবির করেছেন বলেও ভাষ্য রাশেদ খাঁনের।
তিনি এও বলেছেন, উপদেষ্টা পরিষদে শেখ মুজিব প্রেমীরাও রয়েছেন।
“এই অবস্থায় সরকার ডাকাত না ধরে ছিঁচকে চোর ধরা নিয়ে ব্যস্ত! আর ডাকাতদের সেইফ এক্সিট ও প্রটেকশন দিচ্ছে। গণহত্যার বিচার ও দাবিকে নরমালাইজড করার জন্য এই ধরনের ফাতরামো শুরু করেছে সরকার।”
নায়িকা নুসরাতের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ ধরে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রাখেন, “কোন সন্দেহ সংশয় থাকলে বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তদন্ত করতে পারতো। কিন্তু রাঘববোয়াল ছেড়ে ছিঁচকে চোর ধরে হৈচৈ তৈরি করার মহত্ত্ব কী?”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সোমবার দুপুরে বলেছেন, নুসরাত ফারিয়ার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় তিনি নিরপরাধ কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর সেই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি গত মার্চ মাসে নায়িকা নুসরাত ফারিয়া, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তার, আশনা হাবিব ভাবনা, নায়ক জায়েদ খানসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীসহ ২৮৩ জনের নামে আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে ভাটারা থানা গত ২৯ এপ্রিল তা এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এসময় গুলি চালানো হলে তা এনামুলের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।