জাতীয় রাজস্ব বোর্ড— এনবিআরকে যেভাবে দুই ভাগ করা হয়েছে, তা ‘ঠিক হয় নাই’ বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
রাজধানীর লেকশোর হোটেলে সোমবার আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৫-২৬: নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি যে, দুই ভাগ করাটা ঠিক আছে; এটা উচিত এবং এটা শ্বেতপত্রের সুপারিশেও ছিল। কিন্তু যেভাবে এটা করা হয়েছে, সেটা ঠিক হয় নাই।”
‘বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম’ সেমিনারটির আয়োজন করে।
এনবিআর বিলুপ্তি করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি ভিন্ন বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারির প্রক্রিয়া নিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, “এটা যেভাবে করা হয়েছে আলোচনা ব্যতিরেকে এবং পেশাজীবীদের জায়গাকে সংকুচিত করে এবং স্বায়ত্তশাসনের অন্যান্য জায়গাকে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখে— এই পদ্ধতি ঠিক হয়নি। এটা ঠিকমত করাটা এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
গত ১৭ এপ্রিল এনবিআরকে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে আলাদা করতে খসড়া অধ্যাদেশে অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। তবে অধ্যাদেশের খসড়া অনলাইনে আসার পরই তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এরই মধ্যে গত সোমবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারি করে।
তারপর থেকেই এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
অধ্যাদেশের অনুচ্ছেদ ৪(৪) এ বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগের পদসমূহ আয়কর, কাস্টমস, ভ্যাট, অর্থনীতি, ব্যবসায় প্রশাসন, গবেষণা, পরিসংখ্যান, প্রশাসন, অডিট, আইন সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে “কর আইন প্রয়োগ ও কর আহরণ পরিস্থিতি মূল্যায়ন” যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞ কোনো সরকারি কর্মকর্তা রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদসমূহে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের সঙ্গে প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা পদস্থ রয়েছেন, যা তাদের নির্ধারিত পদ।
অধ্যাদেশে নীতির সচিব হিসেবে ‘উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে’ নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এনবিআর বিলুপ্তির ফলে এর বর্তমান সাংগঠনিক জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে সংযুক্ত হবে। আর দুই বিভাগের সাংগঠনিক কাঠামো কেমন হবে, তার সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানাবে।
