ভারতের জন্যই সাজিয়ে রাখা হয়েছে পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র: হানিফ আব্বাসি

পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী মোহাম্মদ হানিফ আব্বাসি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের ১৩০টির বেশি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘এমনি এমনি সাজিয়ে’ রাখা হয়নি, এগুলো ‘শুধুই ভারতের জন্য’ রাখা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে। শনিবার হানিফ আব্বাসি বলেন, “এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রই তোমাদের (ভারতের) দিকে তাক করা আছে।”

আব্বাসির এই বক্তব্য দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান এর আগে তিনটি যুদ্ধ করেছে, যার দুটি কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে। উভয় দেশই পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে এবং বর্তমানে অঞ্চলটির ভিন্ন ভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। অতীতে দুই দেশ আরও কয়েকবার যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল, যার প্রেক্ষিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন হিমালয় অঞ্চলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

পাকিস্তানের ‘ফুল স্পেকট্রাম ডিটারেন্স’ নীতিমালায় প্রচলিত হুমকি প্রতিরোধে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের ‘কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন’ দ্রুত হামলার কৌশল হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। এই বিপরীতমুখী কৌশলগুলোর কারণে যেকোনো সংঘর্ষ দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও লেখক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, “জনগণের চাপ, গত সপ্তাহের হামলার ভয়াবহতা এবং প্রতিরোধ শক্তি পুনর্গঠনের ইচ্ছা বিবেচনায় নিয়ে দিল্লির দিক থেকে কোনো না কোনো ধরনের সামরিক প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। আর যদি তা ঘটে, পাকিস্তান নিজেদের দুর্বল দেখাতে চাইবে না এবং নিশ্চিতভাবেই পাল্টা জবাব দেবে।”

তবে কুগেলম্যান মনে করেন, সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনা নেই। তার মতে, ভারত কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেও তারা আসলে ভারতবিরোধী সন্ত্রাসীদের দুর্বল করা এবং প্রতিরোধ শক্তি পুনরুদ্ধার করার মতো সীমিত পদক্ষেপের কথা ভাবছে।

নয়াদিল্লি অভিযোগ করেছে, পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। যদিও ভারত এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি, তবে অতীতে পাকিস্তানের ভারতবিরোধী সন্ত্রাসীদের সমর্থনের নজির রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে। এর জবাবে ইসলামাবাদও ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে, ভারতীয়দের ভিসা বাতিল করেছে এবং ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *