দুই যুগ আগে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জজ আদালতের দেওয়া রায় হাই কোর্টে বহাল থাকবে কি না, তা জানা যাবে আগামী ৮ মে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাই কোর্ট বেঞ্চ ওই দিন মামলার রায় ঘোষণা করবে। জজ আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) এবং আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।
বুধবার বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকায় উঠলে রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।
আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ। দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান।
২০০১ সালে রাজধানীর রমনার বটমূলে ছায়ানটের বৈশাখ বরণের অনুষ্ঠানে জঙ্গিদের চালানো বোমা হামলায় ১০ জন প্রাণ হারান। তদন্তে উঠে আসে, বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে আঘাত করতেই মৌলবাদী গোষ্ঠী ওই হামলা চালায়।
হামলার দিনই নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। দুটি মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়।
ঘটনার প্রায় আট বছর পর ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দায়রা জজ রুহুল আমিন হত্যা মামলার রায়ে প্রধান আসামি মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: মুফতি হান্নান, আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আব্দুল হাই ও শফিকুর রহমান।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন: শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আব্দুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা মামলার রায় অনুযায়ী মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় রমনা বটমূলে বিস্ফোরক আইনের মামলায় তার নাম বাদ দেওয়া হয়।
কারাগারে থাকা অন্যান্য আসামিরা পরে খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন। অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলাটি নিয়ম অনুযায়ী হাই কোর্টে আসে।
বেশ কয়েকটি বেঞ্চ পরিবর্তনের পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে চলতি বছর শুনানি শুরু হয়। আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে হাই কোর্ট।