শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিসে আহতদের ভাঙচুর

রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষ ভাঙচুর করেছেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই অফিস কক্ষে প্রথমে তালা লাগানো হয়। পরে কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ভাঙচুর হয়। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।

আহতদের অভিযোগ, দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে কয়েকবার ঘোরানোর পরও মঙ্গলবারও টাকা দেওয়া হয়নি। সহায়তার টাকা পেতে আহতরা দুপুরের পর থেকে ওই অফিসের সামনে জড়ো হন। তিন–চার ঘণ্টা অপেক্ষার পর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর জানান, আজ টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এ কথা শুনে আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে তালা লাগান। পরে একজন কর্মচারীর খারাপ আচরণের কারণে ভাঙচুর হয় বলে জানান আহতরা।

ভাঙচুরের পর অফিস কক্ষে দেখা যায়, চেয়ারগুলো এলোমেলো, পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাস ভাঙা এবং মেঝেতে কাচের টুকরা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে।

আহত মামুন হোসেন বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশনের এক কর্মী তাঁদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার কথা বলেন। এতে সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর চালান। তিনি বলেন, ‘আগে তো জুলাই ফাউন্ডেশন ছিল না। আমরা আহতদের জন্য এই ফাউন্ডেশন। কিন্তু বারবার ঘোরানো হয়।’

তিনি জানান, গত বছর আন্দোলনে আহত হওয়ার পর থেকে চিকিৎসাধীন আছেন। বলেন, ‘আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবত চিকিৎসাধীন। আজকে পুলিশ আমাদের মেরেছে, জুলাই ফাউন্ডেশনকে জানানো হলেও কেউ আসেনি। তাহলে কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?’

আহত নাজমুল হোসেন বলেন, ‘সাত মাস ধরে দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য ঘুরছি। যাদের সম্পর্ক ভালো তাদের আগে টাকা দেওয়া হচ্ছে। গুরুতর আহত হয়েও আমরা টাকা পাচ্ছি না।’

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও কামাল আকবর বলেন, আহতদের অনেকেই মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন। তাঁদের রাগ–ভাঙচুরের প্রেক্ষাপট আছে। কোনো অভিযোগ নেই। আহতদের মধ্যে গুরুতরদের প্রথম ধাপে টাকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ৮০৬ জনকে দেওয়া হয়েছে, বাকিদেরও দেওয়া হবে।

তিনি জানান, ফাউন্ডেশনে ৭ কোটি টাকা আছে এবং আহত ও শহীদ পরিবারকে ধাপে ধাপে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। আহতদের তালিকা থেকে ৩৯ জনকে ও শহীদদের তালিকা থেকে চারজনকে বাদ দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ভাঙচুরের পর আহতদের সঙ্গে আলোচনায় রোববার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান কামাল আকবর।