শুরুতেই থিবো কোর্তোয়া দুটি অসাধারণ সেভ করলেও ২৪ মিনিটের মধ্যেই তিন গোল হজম করে বড় পিছিয়ে পড়ে রেয়াল মাদ্রিদ। পিএসজির গোছানো আক্রমণের সামনে শাবি আলোনসোর দলকে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা উন্নতি করলেও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা পিএসজিকে কোনো চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি।
ক্লাব বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে বুধবার ৪-০ ব্যবধানে হারে রেয়াল মাদ্রিদ। জোড়া গোল করেন ফাবিয়ান রুইস, একটি করে গোল করেন উসমান দেম্বেলে ও গনসালো রামোস। হতাশাজনক এক মৌসুমে ট্রফির আশায় এবারও শূন্য হাতেই থাকতে হলো ইউরোপের সফলতম দলটিকে। উল্টো পিএসজির সামনে আছে আরও এক শিরোপা জয়ের সুযোগ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের পর এবার লুইস এনরিকের দল রোববার ক্লাব বিশ্বকাপের নতুন আঙ্গিকের ফাইনালে লড়বে চেলসির বিপক্ষে।
প্রথম চার মিনিটেই কোর্তোয়া দুটি দুর্দান্ত সেভ করেন। কিন্তু ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতায় পরের পাঁচ মিনিটেই জোড়া গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় পিএসজি। রেয়ালের সেন্টার-ব্যাক রাউল আসেন্সিও নিজেদের পেনাল্টি স্পটের কাছে বল ঠিকভাবে ক্লিয়ার করতে না পারায় দেম্বেলে তা কেড়ে নিয়ে এগিয়ে যান। কোর্তোয়া ছুটে এসে ট্যাকল করলেও বল পেয়ে যান ফাবিয়ান রুইস, যিনি ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই আরেক সেন্টার-ব্যাক আন্টোনিও রুডিগারের ভুলে আরও এক গোল হজম করে রেয়াল। বল পেয়ে শট নিতে ব্যর্থ হন রুডিগার, পেছন থেকে ছুটে আসা দেম্বেলে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আড়াআড়ি শটে জালে পাঠান।
যানজটের কারণে ম্যাচ শুরু হয় ১০ মিনিট দেরিতে, আর গ্যালারিতে রেয়াল সমর্থকদের আধিক্য থাকলেও প্রথম দুই গোলেই নেমে আসে পিনপতন নীরবতা।
২৪তম মিনিটে রুইস আবারো ব্যবধান বাড়ান। ওয়ান-টাচ আক্রমণের নিখুঁত প্রদর্শনীতে রেয়ালের রক্ষণকে ভেঙে দেন পিএসজির খেলোয়াড়েরা। পেনাল্টি স্পটের কাছে হাকিমির পাস থেকে ফেদের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে ঠাণ্ডা মাথায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করেন রুইস।
পিএসজির রক্ষণে চাপ দেওয়ার মতো অবস্থাতেই আসতে পারছিল না রেয়াল। প্রায় ৮০ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখে আক্রমণ চালাচ্ছিল পিএসজি। ৩৯তম মিনিটে কাভারাৎস্খেলিয়া আরও একটি গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গেলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
দ্বিতীয়ার্ধে ৪৭তম মিনিটে পিএসজির হয়ে জালে বল পাঠান দিজিরে দুয়ে, তবে অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়। এরপর দেম্বেলে ও কাভারাৎস্খেলিয়াকে তুলে নেন পিএসজি কোচ। ৬১তম মিনিটে রেয়ালের কোচ আলোনসো বেলিংহ্যামের জায়গায় মদ্রিচকে নামান।
ফাইনালের কথা মাথায় রেখে দ্বিতীয়ার্ধে আরও কিছু খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেন পিএসজি কোচ। বিরতির পর রেয়াল কিছুটা ভালো খেললেও কোনো স্পষ্ট সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
৭০তম মিনিটে মাঠে নামেন অভিজ্ঞ রাইট-ব্যাক দানি কার্ভাহাল, গত অক্টোবরের পর যা তার প্রথম ম্যাচ।
একপেশে ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে পিএসজির হয়ে চতুর্থ গোল করেন গনসালো রামোস। কাছ থেকে শক্ত শটে জালে বল জড়ান তিনি এবং উদযাপনে স্মরণ করেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সতীর্থ দিয়োগো জটাকে।
পিএসজি ছাড়ার পর প্রথমবার নিজের সাবেক দলের মুখোমুখি হলেও কিলিয়ান এমবাপে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। একইভাবে রেয়ালের ভিনিসিউস জুনিয়রও ছিলেন নির্বিষ।
এই ম্যাচ দিয়েই রেয়াল মাদ্রিদ অধ্যায় শেষ করলেন মদ্রিচ ও লুকাস ভাসকেস। দলের ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স নতুন মৌসুমের আগে কোচ আলোনসোকে সতর্ক হওয়ার বার্তা দিয়ে গেল।