ঢাকার ভাটারা থানায় হেফাজতে থাকা অবস্থায় ‘বিষপান’ করে মারা গেছেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ফিরোজা আশরাভী। তিনি গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্নেন্স বিভাগের লেকচারার ছিলেন। তাকে স্বামী ইসমাঈল সুজনের পুরুষাঙ্গ কেটে দেওয়ার অভিযোগে আটক করেছিল পুলিশ। আহত সুজন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশাল সায়েন্স অ্যান্ড হিউমিনিটিজ বিভাগের লেকচারার।
পুলিশ জানায়, ফিরোজা প্রথমে পুলিশকে জানিয়েছেন, সুজন তার স্বামী। তবে সুজনের পরিবার এ দাবি অস্বীকার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ঢাকার বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার এইচ এম শফিকুর রহমান জানান, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ভাটারা থানার এসআই জামাল হোসেন, কনস্টেবল শারমিন ও নাছিমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে পল্লবীর বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামীর অঙ্গ কেটে দেন ফিরোজা। পরে তিনিই সুজনকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে সুজনের পরিবারের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার পর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে ফিরোজা ৯৯৯ এ ফোন করে অভিযোগ করেন, তাকে আটক রাখা হয়েছে।
পরে পুলিশ তাকে হাসপাতালে গিয়ে উদ্ধার করে ভাটারা থানায় নিয়ে আসে। পল্লবী থানায় করা মামলায় তাকে হেফাজতে রাখতে বলা হয়। থানায় বসে ফিরোজা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ‘লিগ্যাল এইড’-এর পরিচয় দেওয়া দুজন ট্রান্সজেন্ডার তার জন্য বাসা থেকে মোবাইলের চার্জার ও ইনহেলারসহ একটি প্যাকেট নিয়ে আসেন।
ওই প্যাকেটের বোতল থেকে পান করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। বোতলে কীটনাশক লেখা দেখতে পেয়ে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। কুর্মিটোলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাতে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, বিষের বোতলটি ফিরোজা কুরিয়ারে কিনেছিলেন। কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় ট্রান্সজেন্ডার শোভা ও কণাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, সুজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি ফিরোজাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করেননি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।