তথ্য বিভ্রাটে ঢেকে দেওয়া হলো শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিস্তম্ভ

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে স্থাপিত ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পে’ জন্মতারিখসহ নানা তথ্যগত অসংগতি ধরা পড়েছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর শুক্রবার দুপুরে লাল কাপড় দিয়ে সেটি ঢেকে দেন তাঁর সহযোদ্ধা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে এই ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ স্থাপন করা হয়। এটি বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিইডি)। গত বছরের ১৬ জুলাই এই ফটকের সামনেই পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আবু সাঈদ।

স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পে লেখা হয়েছে, ‘রংপুরের ছেলে শহীদ আবু সাঈদ। জালেম ও জুলুমের বিরুদ্ধে যার শির ছিল চির উন্নত। তিনি বলতেন, “প্রয়োজনে শহীদ হব, তবু মাথা নত করব না।” ১৬ জুলাই আসমানের দিকে দুই হাত প্রসারিত করে শাহাদাত বরণ করলেন। এরপরই সারা বাংলাদেশ জেগে ওঠে অনন্ত বিপ্লবের ওয়াদা নিয়ে।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, তথ্য বিভ্রাটের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক শামসুর রহমান, আরমান হোসেন এবং আবু সাঈদের বাল্যবন্ধু মাহিদ হাসান মেমোরি স্ট্যাম্পটি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন।

শামসুর রহমান বলেন, “প্রথমত, আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন, কিন্তু সেটি সেখানে লেখা হয়নি। দ্বিতীয়ত, শহীদ আবু সাঈদের দুই হাত প্রসারিত ছিল, কিন্তু সেখানে লেখা হয়েছে দুই হাত আসমানের দিকে ছিল। আর এটি যে স্পষ্টত একটি পুলিশি হত্যাকাণ্ড, সেটিও উল্লেখ করা হয়নি।” তিনি আরও জানান, আবু সাঈদের জন্ম ২০০০ সালের ১০ ডিসেম্বর, কিন্তু সেখানে ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি লেখা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, “আবু সাঈদের মৃত্যু এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত সবকিছু দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। সুতরাং এ নিয়ে ভুল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাঁর ইতিহাস বিকৃত বা খামখেয়ালিভাবে লেখা আমরা মেনে নেব না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন-অর রশিদ জানান, স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছিল। উদ্বোধনের আগে এটি ঢাকা অবস্থায় ছিল বলে তাঁরা দেখতে পাননি। ভুল তথ্যের কারণে শিক্ষার্থীরা সেটি গ্রহণ করেননি এবং এটি আবার ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সংশোধনের চেষ্টা চলছে।