ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু এবং দেড় শতাধিক মানুষ আহত ও দগ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৩২ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট।
তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, দগ্ধদের বেশির ভাগের বয়স ১০ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ছয়জন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তারা হলেন—নাফিস, শামিম, শায়ান ইউসুফ, মাহিয়া, আফনান ও সামিয়া। নাফিসের শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। বাকি পাঁচজনের দগ্ধ হওয়ার পরিমাণ তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি।
বাকি ২৬ জনের মধ্যে এরিকসন ও মেহরিনের শরীরের শতভাগ দগ্ধ হয়েছে। ৮০ শতাংশ করে দগ্ধ হয়েছেন ১৩ বছর বয়সী নাজিয়া ও মাহতাব। ৬২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে ১৫ বছর বয়সী মাকিনের, ৬০ শতাংশ করে দগ্ধ হয়েছেন আয়ান (১৪) ও মাসুমা।
তাসনিয়ার ৩৫ শতাংশ, ১১ বছর বয়সী আরিয়ানের ৫৫ শতাংশ, আশরাফুল ইসলামের ১৫ শতাংশ, রোহানের ৫০ শতাংশ, শ্রেয়ার ৫ শতাংশ, কাব্যর ২০ শতাংশ, ইউশার ৬ শতাংশ ও রূপী বড়ুয়ার ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এছাড়া তাসমিয়া ৫ শতাংশ, জায়ানা ৮ শতাংশ, সাইবা ৮ শতাংশ, পায়েল ১০ শতাংশ, আবির ২০ শতাংশ, কাফি আহমেদ ১০ শতাংশ, মুনতাহা ৫ শতাংশ, আলবিনা ৫ শতাংশ ও নিলয়ের শরীরের ১৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
নওরিন ও মাসুকা নামের দুজনের বয়স ও দগ্ধ হওয়ার পরিমাণ তালিকায় উল্লেখ ছিল না।
আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ উড়োজাহাজটি সোমবার দুপুরে উড্ডয়নের ১২ মিনিটের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। পরে উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায় এবং দূর থেকেও ধোঁয়া দেখা যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন কর্মকর্তা জানান, বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ভবনের ভেতরে বাচ্চাদের ক্লাস চলছিল এবং আগুনের কারণে অনেকেই বের হতে পারেননি। আহত ও দগ্ধদের রিকশা, ঠেলাগাড়ি ও বিভিন্ন বাহনে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। তাদের একটি অংশকে প্রাথমিকভাবে ঢাকা সিএমএইচ, উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল, কুর্মিটোলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও লুবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে অধিকাংশকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক বিকালে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইএসপিআরও জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম রয়েছেন।