যারা নির্বাচনকে ভয় পান, তাদের রাজনীতির কোনো প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “তারা প্রেসার গ্রুপ কিংবা এনজিও হিসেবে কাজ করতে পারেন। রাজনীতিও করবেন আবার নির্বাচনে যাবেন না, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবেন—এটা তো চলতে পারে না।”
রোববার ঢাকার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে এই সভার আয়োজন করা হয় ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর’ উপলক্ষে।
আমীর খসরু বলেন, “যেসব দেশে বিপ্লব হয়েছে এবং যেখানে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হয়েছে, সেখানে বিভাজন দেখা দিয়েছে, গৃহযুদ্ধ হয়েছে, দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আর যারা দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরে গেছে, তারা আর্থিক, সামাজিক ও গণতান্ত্রিকভাবে উন্নতি করেছে।”
সবকিছুতে ঐকমত্য হওয়ার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা বিভিন্ন দল; আদর্শ, চিন্তা ও দর্শনে ভিন্নতা থাকবেই। তবে জাতীয় ইস্যুতে ঐক্য থাকা জরুরি। এই ভিন্নমত গণতন্ত্রের জন্যই দরকার। আমরা একদলীয় শাসন বা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে বসিনি।”
তিনি আরও বলেন, “ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু সহনশীলতাও থাকতে হবে। সংঘাতময় রাজনীতির পথে যাওয়া যাবে না। দ্বিমত থাকবে, কিন্তু একে অপরকে শ্রদ্ধা করতে হবে।”
আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর জনগণের মনস্তত্ত্বে পরিবর্তন এসেছে। যেসব দল বা ব্যক্তি এই পরিবর্তনকে বুঝতে পারছে না, তাদের কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই। পরিবর্তন মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আনতে হয়, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমার কথা না শুনলে নির্বাচনে যাব না, শুনলে যাব—এটা অগণতান্ত্রিক আচরণ। গণতন্ত্রের কথা বলে গণতন্ত্র ধ্বংসের পথ প্রশস্ত করা। শেখ হাসিনার সময়েও যেমন সব মানতে হতো, আমাদের কোনো অধিকার ছিল না, এটাও সেই ধারাবাহিকতা।”
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার এবং ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু।