মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সিএমএইচে নেওয়া ১৫টি ‘বডিব্যাগ’-এর মধ্যে ১৪ জনের মৃতদেহ শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ কারণে একজনের মৃত্যুর তথ্য বাদ দিয়ে হালনাগাদ করা হয়েছে।
শনিবার বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজনের মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা ৩৫ জন বলা হয়েছিল। তবে রোববার সকালে নতুন তথ্যে মৃতের সংখ্যা ৩৪ জন হিসেবে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত বৃহস্পতিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করার কথা জানায়। সিআইডি জানায়, সিএমএইচে থাকা অশনাক্ত মৃতদেহ ও দেহাংশ থেকে ১১টি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ওকিয়া ফেরদৌস নিধি, লামিয়া আক্তার সোনিয়া, আফসানা আক্তার প্রিয়া, রাইসা মনি ও মারিয়াম উম্মে আফিয়ার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্যের সঙ্গে সিএমএইচ থেকে পাওয়া একটি চিঠিও যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ২১ জুলাই সিএমএইচে ১৫টি ‘বডিব্যাগ’ পাঠানো হয়। এর মধ্যে তুরাগ থানা পুলিশ ১১টি মৃতদেহ, ২টি অপূর্ণাঙ্গ মৃতদেহ এবং ৫টি দেহের অংশবিশেষ সুরতহাল করে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১১টি মৃতদেহের মধ্যে ঘটনার দিন ৮টি এবং পরদিন আরেকটি লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অবশিষ্ট ২টি মৃতদেহ, ২টি অপূর্ণাঙ্গ মৃতদেহ ও ৫টি দেহাংশ থেকে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ২২ জুলাই নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি। পরে পাঁচজনের মৃতদেহ শনাক্ত করে সিআইডি ফরেনসিক টিম। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে তুরাগ থানা পুলিশ নিহতদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।
হতাহতদের তথ্য প্রদানের দায়িত্বে থাকা ফোকাল পারসন ডা. সরকার ফারহানা কবীর জানান, “সিএমএইচ তাদের ডিএনএ রিপোর্ট অনুযায়ী আপডেট পাঠিয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরাও মৃতের সংখ্যা হালনাগাদ করেছি।”
সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, ৩৪ জন মৃতের মধ্যে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১৭ জন, সিএমএইচে ১৪ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, লুবানা জেনারেল হাসপাতালে একজন এবং ইউনাইটেড হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। লুবানা হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিচয় এখনো অজ্ঞাত।
এ ঘটনায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন আছেন ৪৮ জন। এর মধ্যে ৩৬ জন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে, ১১ জন সিএমএইচে এবং একজন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত সোমবার দুপুরে ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের সামনে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের বেশিরভাগই শিশু।