জুলাই ঘোষণাপত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকারের বাস্তবায়নে সমর্থন তারেক রহমানের

অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের পাশাপাশি আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সাধুবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বুধবার নয়াপল্টনে দলের এক সমাবেশে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার গতকাল জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করেছে। জনগণের অভিপ্রায় বাস্তবায়নের দাবিতে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হয়েছে। জনগণের অধিকার বাস্তবায়নের এসব উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।”

তিনি আরও বলেন, “মানুষের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার যাত্রায় পৌঁছাতে জনগণকে দেড় দশকের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। ‘ফ্যাসিবাদের’ দীর্ঘ সময়ে আমরা হাজারো সহকর্মীকে হারিয়েছি, স্বজনদের রক্ত ঝরতে দেখেছি।”

বিকাল সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়া সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য শেষে বিকাল সাড়ে ৪টায় বিজয় শোভাযাত্রা শুরু হয়। জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত এ শোভাযাত্রায় আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। ফলে ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত সড়ক ভরে ওঠে মানুষের ভিড়ে।

পল্টন মোড় থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, মৎস্যভবন মোড়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সড়ক হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। এদিন ঢাকার পাশাপাশি সব বিভাগীয় শহরেও বিএনপি বিজয় শোভাযাত্রা করে।

তারেক রহমান বলেন, “বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের মধ্যে ভিন্ন মত থাকতে পারে, কিন্তু সেই মতভেদ নিরসনে আলোচনা হতে হবে। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেন সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন না হয়, সেই লক্ষ্যে জাতীয় স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। রাষ্ট্র আমাদের সবার।”

তিনি জানান, জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি কী ধরণের রাষ্ট্র, সরকার ও রাজনীতি করবে, সে বিষয়ে ৩১ দফার রূপরেখা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাস্তবায়নে জনগণের সমর্থন চান তিনি।

‘এ বিজয় অন্ধকার থেকে আলোর কথা বলবে’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “পতিত স্বৈরাচারের আমলে দেশে অন্ধকারের রাজত্ব ছিল। আজকের যাত্রা সেই অন্ধকার থেকে আলোর পথে। সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ভবিষ্যতে আর কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।”

তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যে রাজনৈতিক দলের সদস্যই হোন না কেন, মনে রাখতে হবে—গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ছাড়া কেউ নিরাপদ নয়। একমাত্র গণতন্ত্র ও আইনের শাসনই আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারে।”

দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমদসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন।