ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের প্রতি পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে; অনাদায়ে ছয় মাসের অতিরিক্ত সাজা ভোগ করতে হবে।
দু’জনের আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া জানিয়েছেন, এই সাজা ইতোমধ্যে তারা ভোগ করেছেন।
২০২০ সালের ৪ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের মার্চে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের প্রেসিডেনসিয়াল ও চেয়ারম্যান স্যুটসহ ২৫টি কক্ষে থাকার খরচ বাবদ তিন কোটি ২৩ লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করেছেন পাপিয়া।
ওয়েস্টিন হোটেলে থাকার সময় প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটাও করেছেন, যার বৈধ উৎস তিনি তদন্তের সময় দেখাতে পারেননি। এছাড়া ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মাসে ৫০ হাজার টাকা করে বাসা ভাড়া দিয়েছেন, গাড়ির ব্যবসায় এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে একটি কার ওয়াশে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের নামে ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা রয়েছে, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও সুমনকে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের বাসা থেকে নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। র্যাব জানায়, পাপিয়া ওয়েস্টিন হোটেলে বিল পরিশোধ ও ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ করে কোটি টাকার আয় করতেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, তাদের নামে মোট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে, যা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত। গ্রেপ্তারের পর অস্ত্র, মাদক ও মুদ্রা পাচারের বিভিন্ন মামলাও দায়ের করা হয়েছে। এর আগে অস্ত্র মামলায় পাপিয়া ও সুমনকে ২০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল, আর অর্থ পাচারের মামলায় পাপিয়ার চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। তবে সহযোগীরা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান।