নির্বাচন কমিশনের সংলাপে ডাক পাওয়ার আশা জাতীয় পার্টির

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নেওয়ার সুযোগ না পেলেও নির্বাচন কমিশনের সংলাপে ডাক পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী জাতীয় পার্টি (জাপা)।

বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। ইসির কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আশা করি, কমিশন তার শপথ বজায় রেখে নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে।”

তিনি জানান, সিইসির কাছে দলের উদ্বেগগুলো জানানো হয়েছে এবং তিনি নোট নিয়েছেন। শামীম হায়দারের বিশ্বাস, সীমাবদ্ধতা থাকলেও কমিশন সুষ্ঠু ভোটের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। তার মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষ না হলেও নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থেকে জাপাসহ সব দলকে আলোচনায় ডাকবে।

জাপা মহাসচিব বলেন, “আমরা সরকারকে পুরোপুরি নিরপেক্ষ মনে করি না। তবে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ দেখতে চাই। ইসি সব নিবন্ধিত দলকে ডাকবে, তাদের মতামত শুনবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে। এটি কঠিন কাজ, তবে ইসিকেই করতে হবে এবং সরকার ও দলগুলোকে সহযোগিতা করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সিইসির বক্তব্যে আমরা আশাবাদী হয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।”

আনিসুল-হাওলাদার কমিটি বৈধ নয়
সম্প্রতি জিএম কাদেরকে বাদ দিয়ে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চেয়ারম্যান এবং রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব নির্বাচিত হন। এ অংশটি নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শামীম হায়দার জানান, গত ২৮ জুন কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। জ্যেষ্ঠ কিছু নেতা জিএম কাদেরকে বাদ দিয়ে কাউন্সিল করেন, পরে তাদের বহিষ্কার করা হয়। ওই চিঠি চ্যালেঞ্জ করে মামলা হলেও বহিষ্কার কার্যকর রয়েছে।

তার মতে, চেয়ারম্যান ছাড়া কোনো কাউন্সিল হতে পারে না—এটি গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে। তথাকথিতভাবে কাউন্সিল করা বৈধ নয় এবং এটি বিব্রতকর। জিএম কাদের ছাড়া অন্য কেউ লাঙ্গল প্রতীক পাওয়ার সুযোগ নেই, গঠনতন্ত্রে চেয়ারম্যান পরিবর্তনের সুযোগও নেই।

ভোটে বিএনপি-জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনও অংশ নিয়েছিল
গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে অংশ নেওয়া জাতীয় পার্টিকে অযোগ্য ঘোষণার দাবি এসেছে। এ বিষয়ে শামীম হায়দার বলেন, “অযোগ্য ঘোষণার মতো আরপিওতে কোনো বিধিতে জাতীয় পার্টি পড়ে না। নিষিদ্ধ করার দাবি দুঃখজনক।”

তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জামায়াতে ইসলামীও ওইসব ভোটে অংশ নিয়েছিল। স্থানীয় নির্বাচনে জামায়াতের নেতারা অংশ নিয়েছেন এবং এখনও জনপ্রতিনিধি আছেন, যদিও পরে তারা জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেননি।