বাংলাদেশের এশিয়া কাপ স্কোয়াডে বড় কোনো চমক না থাকলেও কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন সাইফ হাসান। ১৬ জনের জায়গায় যদি ১৫ জনের স্কোয়াড হতো, সাইফ থাকতেন কি না—এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন জানালেন, ব্যাট–বল উভয় দিকেই উপযোগিতা ভেবেই দলে রাখা হয়েছে তাকে।
একসময় সাইফকে বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের ব্যাটসম্যান হিসেবেই ধরা হতো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকও হয়েছিল টেস্ট দিয়েই। তবে সাদা পোশাকে সফল হতে না পেরে ধীরে ধীরে নিজেকে নতুনভাবে গড়েছেন তিনি। টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে ৫ ম্যাচ খেলেছেন, তবে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স না পাওয়ায় বাদও পড়েছিলেন। প্রায় চার বছর পর তিনি ফিরলেন টি–টোয়েন্টি দিয়েই।
তার ব্যাটিংয়ে উন্নতি এলেও কিছু প্রশ্ন থেকেই গেছে। ছক্কা মারার দক্ষতা বাড়ালেও শটের ভান্ডার সমৃদ্ধ নয়। নিজের জোনে বল পেলেই বড় শট খেলতে পারেন। সিঙ্গল নেওয়ার ক্ষেত্রেও ঘাটতি রয়ে গেছে।
পরিসংখ্যানও বলছে তার ফর্ম অনিয়মিত। সর্বশেষ বিপিএলে ১৩ ইনিংসে করেছেন ৩০৬ রান, স্ট্রাইক রেট ছিল ১১৯.০৬। আগের আসরে করেছিলেন ১৪৫ রান ১১৩.২৮ স্ট্রাইক রেটে। গ্লোবাল সুপার লিগে তিন ইনিংসে ৮৪ রান, অস্ট্রেলিয়ার টপ এন্ড টি–টোয়েন্টিতে ছয় ইনিংসে ১৩২ রান করেছেন ১২১.১০ স্ট্রাইক রেটে। তবে জাতীয় লিগ টি–টোয়েন্টিতে ছিল ভীষণ দুর্বল পারফরম্যান্স—সাত ইনিংসে ৪৭ রান, স্ট্রাইক রেট ৭৭.০৪।
তবু কেন তাকে দলে নেওয়া হলো, সে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক,
“তাকে নেওয়ার সময় আরও অনেকে আলোচনায় ছিল। কোচ, অধিনায়ক ও নির্বাচক মণ্ডলী মিলে অনেক আলোচনা হয়েছে। আমাদের ওপরে একজন বোলারেরও দরকার ছিল। এক–দুই ওভার বোলিংয়ের দায়িত্ব সে পালন করতে পারবে। তিন-চার নম্বরে বা ওপেনার হিসেবে তার দিকে নজর ছিল। নম্বর চারে ব্যাটসম্যান হওয়ার পাশাপাশি ওপেনিংয়েরও সক্ষমতা রাখে। আমরা এমন বহুমুখী ক্রিকেটারই খুঁজছি।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রথম একাদশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা থাকে অধিনায়ক ও প্রধান কোচের। আমাদের ওপেনিং জুটি এখন বেশ স্থিতিশীল। তবে কোনো ইনজুরি বা সমস্যা এলে সাইফকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ওপরে কিংবা মাঝখানে—তাওহিদ হৃদয়ের কোনো সমস্যা হলে সেখানেও কাভার করতে পারবে। লিটন দাস আছেন, তিনিও ওপেন করতে পারেন।”
বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই টুকটাক বোলিং করে আসা সাইফ গত কয়েক বছরে বোলিংয়েও উন্নতি করেছেন। অ্যাকশনে সংশয় থাকলেও এখন অনেকটাই রাউন্ড–আর্মে বল করেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার টপ এন্ড টি–টোয়েন্টি সিরিজ শেষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের চার দিনের ম্যাচের স্কোয়াডেও জায়গা পেয়েছিলেন সাইফ। তবে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ায় তিনি দেশে ফিরে সিলেটে ক্যাম্পে যোগ দেবেন।