রাশিয়ার দুটি শীর্ষ জ্বালানি তেল কোম্পানির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে রাশিয়ার গড়িমসি করার অভিযোগে বুধবার ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নেয়। একই দিন রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে একটি বড় আকারের সামরিক মহড়া চালায়।
যে দিনে এই নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এল, তার আগের দিনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যকার বৈঠকের পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানায়, রাশিয়ার প্রধান দুই তেল কোম্পানি রোসনেফট ও লুকয়েল-এর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মস্কোর যুদ্ধ অর্থায়নের সক্ষমতা দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ওয়াশিংটনের এই ঘোষণা হোয়াইট হাউসের সাম্প্রতিক নীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে সমঝোতামূলক নীতি অনুসরণ করছিল। এমনকি গত সপ্তাহেও ট্রাম্প প্রশাসন মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত ছিল।
ট্রেজারি বিভাগের মন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, “এখনই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করার এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার সময়।” তাঁর এই মন্তব্যের পর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম প্রায় দুই ডলার বেড়ে যায়।
এদিকে শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে ক্রেমলিন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায় সেনাপ্রধান জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে মহড়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানাচ্ছেন।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্থলভিত্তিক, সাবমেরিন ও বিমান লঞ্চার থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে এমন দূরপাল্লার অস্ত্রও রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের টু-২২এম৩ কৌশলগত বোমারু বিমান বাল্টিক সাগর ঘিরে টহল দিয়েছে। এ সময় একাধিক বিদেশি, সম্ভবত ন্যাটো সদস্য দেশের যুদ্ধবিমান, তাদের অনুসরণ করে।
এছাড়া, বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। নতুন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাশিয়ার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) খাতও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।