ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর পৃথিবীতে আগমন এবং বিদায়ের দিনটি স্মরণে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য ‘জশনে জুলুস’ হয়েছে।
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শনিবার এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়া। শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দিয়েছেন আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনিয়া মাইজভাণ্ডারিয়া ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী।
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম দিক থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটি দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন ও কদম ফোয়ারা ঘুরে আবার পশ্চিম গেইট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়।
এই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসলমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমবেত হন। শোভাযাত্রার সামনে লেখা ছিল ‘ইয়া নবী সালামু আলাইকা’, ‘ইয়া রাসুল সালামু আলাইকা’।
সাদা টিশার্ট ও সাদা ক্যাপ পরে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া অনেকের হাতে কালেমাখচিত পতাকা, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন দেখা গেছে। এছাড়া তারা বিশাল আকৃতির জাতীয় পতাকাও বহন করেছেন। মিছিল থেকে ধ্বনিত হয়েছে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’, ‘নারায়ে রিসালত, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)’। কেউ কেউ গাজায় যুদ্ধ বন্ধের বার্তা লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে এসেছিলেন শোভাযাত্রায়।
শোভাযাত্রা শেষে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে বিপুল সংখ্যক নারীর উপস্থিতিও দেখা গেছে।
শোভাযাত্রার আগে সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী বলেন, “মহানবী (সা.) সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত। তার আদর্শ অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণ, ন্যায়ভিত্তিক ও কল্যাণকর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার দীক্ষা দিয়েছেন। অথচ আজ পৃথিবী জুড়ে চলছে যুদ্ধ-বিগ্রহ, সন্ত্রাস ও অমানবিকতা। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো প্রিয় নবীর শিক্ষা বাস্তবায়ন। আমাদের উচিত ঈদে মিলাদুন্নবীর পবিত্র বার্তা হৃদয়ে ধারণ করে ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তা প্রয়োগ করা। তবেই সমাজে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার আলো ছড়িয়ে পড়বে।”
হিজরি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.)। তার শাহাদৎ বার্ষিকীও একই দিনে। হিজরি পঞ্জিকা অনুযায়ী এ দিনটিকেই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে থাকেন বাংলাদেশের মানুষ।
দিনটিতে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকে। তবে জরুরি পরিষেবার আওতায় থাকা বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা, হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহনসহ সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির বাইরে থাকেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এ দিনটি উপলক্ষে পৃথক বাণীতে দেশ ও জাতির কল্যাণ ও শান্তি কামনা করেছেন তারা।