নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে মামলা পথে দুদক, সন্দেহজনক লেনদেন শত কোটি টাকা

আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ কোটি ৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি তার ২০টি ব্যাংক হিসাবে ৭৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক, যা ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বলে দাবি সংস্থাটির।

সোমবার দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বলেন, “তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”

পাপনের স্ত্রী রোকসানা হাসানের বিরুদ্ধেও আলাদা মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১১টি ব্যাংক হিসাবে ৪৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া, ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৮টি ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার ‘সন্দেহজনক’ লেনদেনের অভিযোগে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিসিবির পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিকের বিরুদ্ধেও মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে।

পাশাপাশি তাদের পাঁচজন নিকটাত্মীয়কে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়ার সুপারিশ করেছে দুদক। এরা হলেন— পাপনের মেয়ে রুশমিলা রহমান (অহনা), পুত্র রাফসান রহমান, মেয়ে সুনেহরা রহমান (তন্নি), তন্নির স্বামী রাকিন আল মাহমুদ এবং ইসমাইল হায়দার মল্লিকের স্ত্রী সুলতানা নিঝুম।

পাপনের বিরুদ্ধে দুদকের আরও একটি অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তিনি বিসিবি ও সরকারি অর্থের অপব্যবহার করে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং বেক্সিমকোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন।

সরকারের পালাবদলের পর গত ১৮ মার্চ দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দেয়।

মার্চের মাঝামাঝি দুদক কমিশনের উপপরিচালক সাইদুজ্জামানকে দলনেতা করে তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করে।

এর আগে ১৬ মার্চ আদালত নাজমুল হাসান, তার স্ত্রী রোকসানা হাসান, মেয়ে সুনেহরা রহমান, রুশমিলা রহমান ও ছেলে রাফসান হাসানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত ২৮ এপ্রিল বিসিবিকে চিঠি দিয়ে ২৭ ধরনের তথ্য ও নথিপত্র সাত কর্মদিবসের মধ্যে সরবরাহ করতে বলে দুদক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *