মাস পাঁচেক আগে ভারত ও পাকিস্তান যে চরম উত্তেজনাকর সংঘাতে জড়িয়েছিল, তাতে পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত। ভারতের বিমান বাহিনী প্রধান অমর প্রীত সিং শুক্রবার বিমান বাহিনী দিবসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন। এর আগে তিনি পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি সামরিক বিমান ধ্বংসের কথা বলেছিলেন, কিন্তু এবারই প্রথম মডেলের নাম উল্লেখ করা হলো।
অমর প্রীত সিং বলেন, “আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের কাছে একটি দূরপাল্লার হামলার প্রমাণ রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের সিস্টেম জানাচ্ছে, উচ্চপ্রযুক্তির এফ-১৬ এবং জেএফ-১৭ ক্লাসের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছে।” এফ-১৬ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি, আর জেএফ-১৭ পাকিস্তান চীনের সহায়তায় তৈরি করেছে।
রয়টার্সের অনুরোধে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। সংঘাতের সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ফরাসি রাফালও রয়েছে। ভারত কিছু ক্ষতির কথা স্বীকার করলেও ছয়টি বিমান হারানোর দাবি অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের দাবির বিষয়ে অমর প্রীত কোনো মন্তব্য করেননি।
সংঘাতের পটভূমি হিসেবে, গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর এটি ভারতের ওপর সবচেয়ে বড় নাগরিক হামলা হিসেবে বিবেচিত হয়। ভারতের দাবি, পেহেলগাম হামলায় সন্দেহভাজন চারজনের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক।
উত্তেজনার মধ্যে ৭ মে ভারতীয় জঙ্গিবিমান পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালায়, যা নয়া দিল্লি ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ হিসেবে বর্ণনা করে। এরপর দুই দেশ জঙ্গিবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও কামান ব্যবহার করে পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়ায়। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে, ১০ মে পর্যন্ত বহু প্রাণহানি ঘটে।
ভারত গত জুলাইয়ে জানিয়েছে, হামলায় জড়িত তিন ‘সন্ত্রাসী’কে হত্যা করা হয়েছে এবং তারা পাকিস্তানি নাগরিক ছিল—এর ‘বিশদ প্রমাণ’ রয়েছে। তবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের বর্ণনাকে ‘বানোয়াট’ বলে মন্তব্য করেছে।
প্রতিবেশী দেশ দুটি কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে তিনটি যুদ্ধে লড়েছে, যার প্রভাব বাণিজ্য, ভ্রমণ এবং খেলাধুলার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে পড়েছে। সর্বশেষ সংঘাতের পর ভারত একটি পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত রেখেছে, যা পাকিস্তান ‘যুদ্ধের শামিল’ হিসেবে মনে করছে।