অবসর সুবিধা দ্রুত প্রদানের দাবি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের

অবসরের পরপরই বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের ভাতার টাকা পরিশোধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমন্বয় পরিষদ। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে এ দাবি তোলেন পরিষদের নেতারা।

রাজধানীর মতিঝিলের টি অ্যান্ড টি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বরকোটা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি মূল প্রবন্ধে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন—

  • বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসরের দিন অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা প্রদান করা।
  • অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি গঠন করা।
  • শুধু শিক্ষকদের দিয়ে স্থায়ী শিক্ষা ও উন্নয়ন কমিশন গঠন করা।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র গঠন করা।
  • সকল শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে শিক্ষা জাতীয়করণ করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও এডুকেশন রিফর্ম ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান আ ন ম এহছানুল হক মিলন আসেননি। পরে জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহজারুল হান্নান, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ইসহাক হোসেন এবং বিএনপির গণশিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খাঁনের। তবে তারা আসেননি।

জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিগৃহীত। তারা বিভিন্নজনের দ্বারে ঘুরেও অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পাচ্ছেন না। এ টাকার জন্য অনেকের চিকিৎসা ও হজ আটকে আছে। কিন্তু এ টাকা পেতে অবসরে যাওয়ার পরেও শিক্ষকদের চার থেকে পাঁচ বছর সময় লাগছে।” তিনি অবসরের দিনই যেন এ টাকা পরিশোধ করা হয়, সে দাবি জানান। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষা নিশ্চিত করা ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখেন।

সভাপতির বক্তব্যে টি অ্যান্ড টি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূর হোসেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানান। তিনি বলেন, “দেশ বাঁচাতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। এ জন্য সব শিক্ষক সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করতে হবে।” তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “সরকারি চাকরিজীবীদের ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির সভাপতি হওয়ার বিধান রেখে সরকার নীতিমালা করেছে। কিন্তু আমরা (এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা) কি চাকরিজীবি না?”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ মো. আব্দুর রহীম, কবি লিলি হক এবং আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রুমানা শাহীন শেফা।